রাজনীতি

নির্বাচনি মাঠে সংঘাত: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে জামায়াতের পথসভায় হামলার অভিযোগ

reporter-icon
নাদিম তালুকদার: স্টাফ রিপোর্টার ( মুক্তধ্বনি )
ডিসেম্বর ১৩, ২০২৫ | 0
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে জামায়াতের পথসভায় হামলার অভিযোগ
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে জামায়াতের পথসভায় হামলার অভিযোগ
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মো. হুমায়ুন কবিরের নির্বাচনি পথসভায় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অন্তত একজন জামায়াত কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে দলটি। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার ফলদা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর এলাকায় কিছু সময় উত্তেজনা বিরাজ করে। জামায়াত নেতাদের অভিযোগ, মাওলানা হুমায়ুন কবিরকে সঙ্গে নিয়ে তারা শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনি পথসভা ও প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। সভা চলাকালে হঠাৎ স্থানীয় বিএনপির কিছু নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে উসকানিমূলক স্লোগান দিতে থাকেন। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জামায়াত নেতাকর্মীরা সভা শেষ করে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাদের দাবি, জামায়াতের নেতাকর্মীরা অন্য পথ দিয়ে সরে যাওয়ার সময় একপাশে রাস্তা অবরোধ করে রাখা হয় এবং সভাস্থলে থাকা চেয়ার, টেবিল ও মাইক ভাঙচুর করা হয়। এ সময় ধাক্কাধাক্কিতে জামায়াতের এক কর্মী আহত হন। ভূঞাপুর উপজেলা জামায়াতের আমির আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আমরা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনি প্রচারণা চালাচ্ছিলাম। কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই বিএনপির নেতাকর্মীরা আমাদের সভার আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে। এটি পরিকল্পিত হামলা। এ ঘটনায় আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমরা নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের কাছে নিরপেক্ষ তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।” তিনি আরও বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ধরনের হামলা গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান তালুকদার সেলু। তিনি বলেন, “এটি কোনো পরিকল্পিত হামলা নয়। একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা মাত্র, যা ভুল বোঝাবুঝি থেকে হয়েছে। একজন ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। আমরা কাউকে প্রতিহত করিনি, বরং পরিস্থিতি শান্ত রাখতে সহায়তা করেছি। ভবিষ্যতেও সৌহার্দ্য বজায় রাখতে আমরা প্রস্তুত।” এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাব্বির রহমান বলেন, “ঘটনার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।” এ ঘটনার পর স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষ শান্তিপূর্ণ নির্বাচনি পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা প্রত্যাশা করছেন।
সর্বাধিক পঠিত
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির ঢাকা বিভাগীয় ব্যুরো চীফ হলেন সাংবাদিক মোঃ মনিরুজ্জামান।

দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”

শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে?

মাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দ‍র্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৩৩৪তম পর্বে নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নিয়ামত কমে যাবে কি না, সে বিষয়ে ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া। প্রশ্ন : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে? উত্তর : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা কুফরি। এটা বড় কুফরি না, ছোট কুফরি। যদি আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে থাকেন, তাহলে তাঁরা কুফরি কাজ করে থাকলেন। এ জন্য আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার সঙ্গে কুফরি করো না।’ আল্লাহ যে নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহর নিয়ামত লাভ করে সুন্দর জীবনযাপন করা, এটা যদি কেউ আল্লাহর কাছে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরতে না পারে, তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া করলেন না, কুফরি করলেন। এই জন্য আল্লাহ সুরা দোহার শেষ আয়াতে বলেছেন, ‘তুমি তোমার রবের নিয়ামত প্রকাশ করো। কারণ, তোমার কাছে যখন নিয়ামত আসছে, তখন আল্লাহ পছন্দ করেন যে তুমি আল্লাহর এই নিয়ামতের বিষয়টি তুলে ধরবে।’ আল্লাহর কাছে বলবে, আল্লাহ আমাকে এই নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ নিয়ামতকে বান্দার কাছে তুলে ধরার জন্য বলেছেন, বহিঃপ্রকাশ করার জন্য বলেছেন। বহিঃপ্রকাশ দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো নিয়ামতের ব্যবহারের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করা। দ্বিতীয়ত, নিয়ামতের বিষয়টি হলো মানুষের কাছে নিয়ামত তুলে ধরবে। যাতে করে আল্লাহর প্রশংসা প্রকাশ পায়। নিয়ামতের শুকরিয়া যদি কেউ আদায় না করেন, তাহলে কুফরি হবে। আল্লাহ বলেছেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করে থাক, তাহলে আমি আরো বৃদ্ধি করে দেব। বান্দারা যখন নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে, তখন আল্লাহ আরো নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করে দেন। আর যদি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা হয়, তাহলে আল্লাহ নিয়ামত কমিয়ে দেবেন এবং সেইসঙ্গে আরেকটি কঠিন বাণী আল্লাহ বলেছেন, ‘জেনে রাখো আল্লাহর কঠিন আজাবও তোমাদের জন্য অবধারিত থাকবে।’ নিয়ামতের শুকরিয়া শুধু মুখে আদায় করা যথেষ্ট নয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর শুকরিয়া আমলের মাধ্যমে আদায় করো।’ সুতরাং বান্দারা শুকরিয়া আদায় করবে। শুকরিয়ার অনেকগুলো দিক রয়েছে, তার মধ্যে আমলের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করা হলো শুকরিয়ার সর্বোচ্চ স্তর।

নবী মুহাম্মদ (সাঃ) - নিষ্পাপ চরিত্রের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ

তিনি ছিলেন মানবজাতির আদর্শ। তিনি অত্যন্ত উদার ও বিনয়ী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক এবং একজন সাহসী যোদ্ধা। এছাড়াও তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক, একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন সফল প্রচারক ছিলেন। তিনিই উত্তম চরিত্র ও উদারতার একমাত্র উৎস। তিনি সকলের আদর্শহীন এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব। যার প্রেমে, দুনিয়া মাতাল। তিনি আমার আদর্শ, তিনি আমার নেতা। তিনি আমার নবী, আমাদের নবী এবং সকলের নবী। তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) তিনি সর্বোত্তম আদর্শ। সমস্ত মানবজাতির জন্য করুণা। অন্ধকারে নিমজ্জিত বিশ্বের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে। তার অসাধারণ চরিত্র, মাধুর্য এবং অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব সবাইকে অবাক করেছে। মুমিনের চঞ্চল হৃদয় তাকে এক নজর দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকে। কবি কাজী নজরুল বলেছেন: “বিচ্ছেদের রাত ছিল একাকার কান্নার ভোর; আমার মনে শান্তি নেই, আমি কাঁদছি। হে মদিনাবাসীর প্রেমিক, আমার হাত ধর।" তার নিষ্কলুষ চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।" (সূরা আল-আহজাব, আয়াত 21)। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আজ কিছু লোক সেই নবীর সম্মানকে অবমাননা করছে। হৃদয় ভেঙ্গে যায়। আমাদের ক্ষমা করুন, হে নবী! তিনি তার অবিস্মরণীয় ক্ষমা, উদারতা, সততা, নম্রতা প্রভৃতির বিরল মুগ্ধতা দিয়ে বর্বর আরব জাতির আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য তারা তাকে ‘আল-আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তারা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকার করেছিল যে তিনি নম্র এবং গুণী ছিলেন। টাকা দিয়ে নয়, ভালো ব্যবহার দিয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে জয় করেছেন। আল্লাহ তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহৎ চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা আল কালাম, আয়াত ৪)। তিনি কখনো মানুষকে তুচ্ছ করেননি। আত্মসম্মানবোধে তিনি কাউকে তুচ্ছ মনে করেননি। তিনি বিশ্বের হৃদয়ে উচ্চতর চরিত্রের একটি অনুপম মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। নম্রতা তার চরিত্রে সর্বদা উপস্থিত ছিল। পৃথিবীর মানবতার কল্যাণে তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল শ্রেষ্ঠ আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবে। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে আমার উত্তম চরিত্র পূর্ণ করার জন্য প্রেরিত করা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত) ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং আচার-আচরণে অত্যন্ত বিনয়ী। দুর্বল ব্যক্তিকে কড়া কথায় আঘাত করবেন না। তিনি কোন মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অসাধ্য সাধন করতে বাধ্য করেননি। গরিব-অসহায় মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। তিনি লোকদেরকে তাদের আচরণে অপ্রয়োজনীয় রাগ ও রাগ থেকে সর্বদা বিরত থাকার উপদেশ দিতেন এবং মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন এবং যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করেন।” (মিশকাত) কাফেররাও তার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সদয় ও নম্র আচরণ পেয়েছিল। তার অনুসারীরা তাকে উচ্চ সম্মানের সাথে ধরেছিল কারণ তিনি খুব নমনীয় এবং নম্র ছিলেন। হজরত আয়েশা (রা.) তার ভদ্র আচার-আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘নবী (সা.) রূঢ় বক্তা ছিলেন না, প্রয়োজনের সময়ও তিনি কঠোর ভাষা ব্যবহার করতেন না। প্রতিহিংসা তার সাথে ছিল না মোটেও। মন্দের বিনিময়ে ভালোই করেছেন। সব ক্ষেত্রেই তিনি ক্ষমা পছন্দ করতেন। তিনি লোকদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন, “আল্লাহর ইবাদত কর, করুণাময় প্রভু, ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, সালাম দাও এবং এসব কাজের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ কর। তিনি উত্তর দিলেন, "ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং অপরিচিত সকলকে সালাম করা।" (বুখারী ও মুসলিম)। মহানবী (সা.)-এর মর্যাদাকে সম্মান করা মুসলমানদের ধর্মীয় কর্তব্য এবং প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের মৌলিক অংশ।

মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি?

নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৯২৯তম পর্বে ই-মেইলের মাধ্যমে কানিজ নাহার দিপা জানতে চেয়েছেন, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? অনুলিখন করেছেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ। প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? উত্তর : না দোয়ার জন্য আলাদা কোনো মাহফিল নেই। এটা আসবে কেন? আমরা একটা জায়গা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি কাজ করছি। কিন্তু সেই কাজটি ভুল করে আরও বড় ভুলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমাদের সমাজে একটি প্রথা একেবারে ছেয়ে গেছে। যেমন—একজন মারা গেলে তার জন্য মিলাদ-মাহফিল করা কিংবা কূলখানি করা। কিন্তু এগুলো সবই বেদআতি কাজ। এগুলো সঠিক কাজ নয়। অনেকে মনে করছে, দোয়া-মাহফিল করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা একদমই নয়। এসব ইসলামে অনুমোদন দেয়নি। এইগুলো পুরোটাই বেদআত। মানুষ চাইলে যে কোনো সময় কিংবা যে কোনো জায়গা থেকে দোয়া করতে পারবেন। দোয়ার সঙ্গে মাহফিল কিংবা আলাদা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা জায়েজ নেই। আশা করি, আপনি বুঝতে পেরেছেন।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রতিযোগিতা: চ্যাটজিপিটি বনাম ডিপসিক?

র্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি ও চীনের ডিপসিকের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতার নয়, বরং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চ্যাটজিপিটি দীর্ঘদিন ধরে ব্লগ লেখা, গবেষণা, প্রোগ্রামিংসহ নানান কাজে অপরিহার্য টুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি চীনের তৈরি ডিপসিক এআই জগতে নতুন আলোড়ন তুলেছে। তারা দাবি করছে, তুলনামূলক কম চিপ ব্যবহার করেই অত্যাধুনিক এআই সেবা দেওয়া সম্ভব, যেখানে ওপেনএআই-এর বিশাল মডেলগুলোর জন্য ১৬,০০০ বা তারও বেশি চিপ প্রয়োজন হয়, সেখানে মাত্র ২০০০ চিপ দিয়ে ডিপসিক কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। দুই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। ✅ চ্যাটজিপিটি: বিস্তৃত বিশ্লেষণ ও গভীর গবেষণা উপস্থাপন করতে পারে, যা একাডেমিক ও জটিল সমস্যার সমাধানে সহায়ক। ✅ ডিপসিক: দ্রুত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে পারে, যা তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাশী ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী। লেখালেখির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি কেবল ধারণা ও প্লটের কাঠামো গড়ে তোলে, যেখানে ডিপসিক প্রায় পুরো গল্প তৈরি করে দিতে পারে। একইভাবে, কোডিংয়ের ক্ষেত্রেও ডিপসিক কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত সমাধান দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ডিপসিকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সংরক্ষণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের সরকার ইতোমধ্যেই ডিপসিকের ডেটা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওপেনএআই নিজেও অতীতে অনুমতি ছাড়া মানুষের লেখা ডেটা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, যা এখন ডিপসিকের বিরুদ্ধে উঠছে। ডিপসিকের সাফল্যের ফলে এআই চিপের বাজারেও বড় প্রভাব পড়েছে। এনভিডিয়া, যারা উন্নত চিপ তৈরিতে বিশ্বব্যাপী অগ্রগণ্য, তাদের শেয়ারের মূল্য একদিনে প্রায় ১৭% কমে গেছে। কারণ, কম শক্তিশালী হার্ডওয়্যারেও কার্যকর এআই সম্ভব হলে উচ্চমূল্যের উন্নত চিপের বাজার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়, তবে ডিপসিকের উদ্ভাবন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই চীনে উন্নত চিপ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কম খরচে ভালো এআই তৈরি হলে মার্কিন প্রযুক্তি খাতেরও লাভ হতে পারে। এই প্রতিযোগিতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎকে আরও উন্নত ও বহুমাত্রিক করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান দরকার, সেখানে হয়তো ডিপসিক এগিয়ে থাকবে, আর যেখানে গবেষণা ও জটিল বিশ্লেষণের প্রয়োজন, সেখানে চ্যাটজিপিটির মতো বৃহৎ মডেলগুলো প্রাধান্য পাবে। শেষ পর্যন্ত, এই প্রতিযোগিতাই হয়তো এআই প্রযুক্তিকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করবে।

রাজনীতি

আরও পড়ুন
শরিফ ওসমান হাদি ও এরশাদ উল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল

শরিফ ওসমান হাদি ও এরশাদ উল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি এবং চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপি’র মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর ২০২৫) টাঙ্গাইল-৫ আসনের বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী ও বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু’র নেতৃত্বে এই প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।মিছিলটি টাঙ্গাইল শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় নেতাকর্মীরা হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। পাশাপাশি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিরোধী দলীয় প্রার্থীদের ওপর ধারাবাহিক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বক্তারা।প্রতিবাদ মিছিলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন,নির্বাচনের মাঠে বিরোধী কণ্ঠকে দমন করতে পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হচ্ছে। এসব হামলা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার আদায় করব।” মিছিলে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। তারা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানান।

ডিসেম্বর ১৩, ২০২৫ 0
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলা: টাঙ্গাইল জেলা জামায়াতের বিক্ষোভ

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলা: টাঙ্গাইল জেলা জামায়াতের বিক্ষোভ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে জামায়াতের পথসভায় হামলার অভিযোগ

নির্বাচনি মাঠে সংঘাত: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে জামায়াতের পথসভায় হামলার অভিযোগ

টাঙ্গাইল-৫ আসনে টুকুর মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে কফিন মিছিল

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী: “সবাইকে নিয়ে নির্বাচন হলে কৃষক শ্রমিক জনতালীগ অংশ নেবে”
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী: “সবাইকে নিয়ে নির্বাচন হলে কৃষক শ্রমিক জনতালীগ অংশ নেবে”

কৃষক শ্রমিক জনতালীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম বলেছেন, “দেশের সকল রাজনৈতিক দলকে নিয়ে নির্বাচন হলে কৃষক শ্রমিক জনতালীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। কিন্তু যদি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে বাদ দিয়ে শুধু বিএনপি, এনসিপি, জামায়াত নির্বাচন করে, তাহলে ২০ শতাংশ মানুষও ভোট দিতে যাবে না। সে ভোটে আমরাও অংশ নেবো না।” বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে কাদেরিয়া বাহিনীর উদ্যোগে আয়োজিত টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। “শেখ হাসিনার অন্যায় আওয়ামী লীগের অন্যায় নয়” — কাদের সিদ্দিকী বঙ্গবীর বলেন, “প্রধান উপদেষ্টাকে আমি চিনতে পারিনি। আমার আগে আপনাকে চিনেছে শেখ হাসিনা, চিনেছে দেশের মানুষ। শেখ হাসিনার অন্যায় বঙ্গবন্ধুর অন্যায় নয়, আওয়ামী লীগের অন্যায়ও নয়। মুক্তিযুদ্ধের অন্যায়ও নয়।” তিনি আরও বলেন, “এই আওয়ামী লীগকে জন্ম দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শামসুল হক। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ জন্ম দেননি। তাকে রাজনৈতিকভাবে সমর্থন করি না, কারণ তিনি মনে করেন দেশটা তার বাবার—আর আমি মনে করি বঙ্গবন্ধু দেশের সেবক, আমিও দেশের সেবক, আমরা সবাই আল্লাহর গোলাম।” “আওয়ামী লীগের বিচার কেউ করতে পারবে না” কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, “শেখ হাসিনার বিচার করতে চাইলে করুন, কিন্তু আওয়ামী লীগের বিচার করতে পারবেন না। আইয়ুব খান পারেনি, ইয়াহিয়া খান পারেনি—আপনারাও পারবেন না। আওয়ামী লীগের যারা দোষ করেছে তাদের বিচার হোক, কিন্তু সবাই তো দোষ করেনি।” বঙ্গবন্ধু ও জিয়ার প্রসঙ্গ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি তুলে ধরে তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধ করেছি, জিয়াউর রহমানও ছিলেন। দু’জনকেই বীরোত্তম খেতাব দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু সরকার। এখানে ভিন্নতা নেই; ভিন্নতা সৃষ্টি করেই আমরা স্বাধীনতা–বিরোধী জামায়াতকে শক্তিশালী করেছি।” জামায়াত প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “স্বাধীনতা যুদ্ধে জামায়াত যে ধর্ষণ, হত্যা, নির্যাতন করেছে—বাংলাদেশের মা–বোনের সম্মান ধ্বংস করেছে—তারা ক্ষমা না চাইলে দেশে কথা বলার সুযোগ পেত না। বঙ্গবন্ধুর মানবিকতার কারণেই তারা বেঁচে যেতে পেরেছে।” টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবস: ইতিহাস, স্মৃতি ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল পাক হানাদার মুক্ত হয়—এই ঐতিহাসিক দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতিবছরের মতো এবারও কাদেরিয়া বাহিনী আলোচনা সভা আয়োজন করে। এতে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধের স্মৃতি, তখনকার পরিস্থিতি এবং স্বাধীনতার মূল্যায়ন তুলে ধরেন। সভায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বঙ্গবীর বলেন, “বাংলাদেশ আজ যেকোনো সংকটেও টিকে আছে মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের কারণেই। দেশের সংকট মোকাবিলায় নতুন প্রজন্মকেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করতে হবে।” সভায় বক্তারা কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন— সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, টাঙ্গাইল জেলা মুজিব বাহিনীর প্রধান আলমগীর খান মেনু, কৃষক শ্রমিক জনতালীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান খোকা বীরপ্রতিক, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার ফজলুল হক বীরপ্রতিক, আবুল কালাম আজাদ বীরবিক্রম, কাদেরিয়া বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার কাজী হুমায়ুন বাঙ্গাল, দেলদুয়ার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, দেলদুয়ার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু তহের বাবলু প্রমুখ। সভা শেষে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে বিশেষ দোয়া ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

ডিসেম্বর ১২, ২০২৫ 0
"কালিহাতীতে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনে দাবিতে মশাল মিছিল" - পর্তুগাল বিএনপির আহব্বায়কের তীব্র নিন্দা

"কালিহাতীতে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনে দাবিতে মশাল মিছিল" - পর্তুগাল বিএনপির আহব্বায়কের তীব্র নিন্দা

টাঙ্গাইলে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল

টাঙ্গাইলের ৪টি আসনে এনসিপির প্রাথমিক প্রার্থী ঘোষণা

টাঙ্গাইলের ৪টি আসনে এনসিপির প্রাথমিক প্রার্থী ঘোষণা - মনোনীত হলেন যারা

টাঙ্গাইলের পাঁচটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে দ্বন্দ্ব
টাঙ্গাইলের পাঁচটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে দ্বন্দ্ব

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টাঙ্গাইল জেলাজুড়ে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরম আকার ধারণ করেছে। জেলার ৮টি আসনের মধ্যে অন্তত পাঁচটিতে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব, ক্ষোভ ও বিভক্তি প্রকাশ্য রূপ নেয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে সৃষ্টি হয়েছে উত্তেজনা। প্রায় প্রতিদিনই এসব আসনে মিছিল, মানববন্ধন, সড়ক অবরোধ, মৌন মিছিলসহ নানা কর্মসূচি চলছে। একাধিক স্থানে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়াও ঘটছে। অবস্থান বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে—বিএনপির এই অভ্যন্তরীণ সংকটের সুযোগ নিতে ইতোমধ্যে মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। জানা গেছে, টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর–ধনবাড়ী), টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল), টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী), টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) ও টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল–সখীপুর) আসনে মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই তীব্র প্রতিযোগিতা ও মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। মনোনয়ন বঞ্চিতরা দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র অবস্থান নিয়ে মাঠে নেমেছেন এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের মনোযোগ আকর্ষণে নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর মনোনয়নকে কেন্দ্রেও জমেছে ক্ষোভ। তার বিপক্ষে মনোনয়ন প্রত্যাশী ফরহাদ ইকবালের সমর্থকেরা মশাল মিছিল, মৌন মিছিলসহ নানা কর্মসূচি করছেন। টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনেও মনোনীত প্রার্থী রবিউল আওয়াল লাভলুকে ঘিরে নেতাকর্মীদের একাংশের মধ্যে দৃশ্যমান অসন্তোষ বিরাজ করছে। দেলদুয়ারে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহতও হয়েছেন। টাঙ্গাইল-১: ফকির মাহবুব আনাম স্বপন বনাম অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী। এই আসনে কোন্দল দিনদিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। মনোনীত প্রার্থী ফকির মাহবুব আনাম স্বপন ও মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ইতোমধ্যে বেসরকারি হাসপাতাল, দোকানপাট ভাঙচুরসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।স্থানীয়রা জানান, দু’গ্রুপের প্রতিনিয়ত অবস্থান—এলাকাজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। বিএনপির এই বিভক্ত পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছেন জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ মোন্তাজ আলী। টাঙ্গাইল-৩: নাসির বনাম আজাদ, উত্তেজনায় ঘাটাইল। ঘাটাইলে নতুন মুখ অ্যাডভোকেট এসএম ওবায়দুল হক নাসির মনোনয়ন পেলেও সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফর রহমান খান আজাদ তার ছেলে-মেয়ে, অনুসারীদের নিয়ে শোডাউনে ব্যস্ত। মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা, মানববন্ধনসহ নানা ধরনের কর্মসূচির কারণে ঘাটাইল এলাকায় তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতে কুণ্ঠাবোধ করছেন না। এদিকে জামায়াতের প্রার্থী হুসনি মোবারক বাবুল নীরবে-নিভৃতে মাঠ গরম রাখছেন। টাঙ্গাইল-৪: দীর্ঘদিনের বিভক্তি, যুক্ত হলো নতুন অধ্যায়। কালিহাতীতে দীর্ঘদিনের বিএনপির বিভক্তি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। মনোনীত প্রার্থী লুৎফর রহমান মতিন সক্রিয়ভাবে মাঠে থাকলেও, বেনজির আহমেদ টিটো মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে শক্ত অবস্থান বজায় রেখেছেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত মিটিং-মিছিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই আসনে আরও জটিলতা তৈরি হয়েছে সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর সম্ভাব্য প্রার্থিতাকে ঘিরে। তার অনুসারীরা তাকে স্বাগত জানিয়ে যে শোডাউন করেছেন, তা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এদিকে জামায়াত, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ এবং সারওয়ার সিরাজ শুক্লার সম্ভাব্য প্রার্থিতাও এই আসনকে বহুমাত্রিক প্রতিযোগিতার কেন্দ্রস্থলে পরিণত করেছে। টাঙ্গাইল-৭: আজাদ সিদ্দিকী বনাম সাইদ সোহরাব—মির্জাপুরে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা। মির্জাপুরে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী পুরোদমে প্রচারণায় নেমেছেন। অন্যদিকে মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় নেতা সাইদুর রহমান সাইদ সোহরাব প্রকাশ্যেই মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবি তুলে সভা-সমাবেশ করছেন। এই আসনে কয়েকটি ইসলামী দলের প্রার্থীও সক্রিয় হওয়ায় প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। টাঙ্গাইল-৮: বাসাইল–সখীপুরে দুই প্রার্থীর শক্ত অবস্থান। বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান মাঠে প্রচারণা জোরদার করলেও তার প্রতিদ্বন্দ্বী মনোনয়ন প্রত্যাশী সালাউদ্দিন আলমগীর রাসেল মাঠে ব্যাপক তৎপরতা বজায় রেখেছেন। রাসেলের তহবিল থেকে বিভিন্ন সামাজিক কাজে অনুদান, রাস্তাঘাট মেরামতসহ জনসম্পৃক্ত কার্যক্রম তাকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে। এ আসনে কাদের সিদ্দিকীর সম্ভাব্য প্রার্থিতা এবং জামায়াতের সক্রিয়তা নির্বাচনকে আরও জটিল করবে। স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা বলছেন,“মনোনয়ন নিয়ে এমন বিভক্তি থাকলে বিএনপির ভোটব্যাংক ছিন্নভিন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে স্বতন্ত্র ও প্রতিদ্বন্দ্বী দলের প্রার্থীরা বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন।”অন্যদিকে, তৃণমূল বিএনপি নেতাদের দাবি—“কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত দ্রুত ও দৃঢ়ভাবে কার্যকর না হলে প্রার্থী–বিরোধিতা বিএনপির নিজস্ব শক্তিকেই দুর্বল করে দেবে।” জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন বলেন—“বিএনপি বড় দল। একাধিক প্রার্থী থাকাই স্বাভাবিক, তবে বিশৃঙ্খলা কাম্য নয়। অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে সবাইকে একমঞ্চে আসতে হবে।”

ডিসেম্বর ১০, ২০২৫ 0

টাংগাইল সদর আসন ৫ জামাতে ইসলাম হতে মনোনীত প্রার্থী আহসান হাবীব মাসুদ এর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

টাঙ্গাইল সদরে মৌন মিছিল: মুখে কালো কাপড় বেঁধে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ

টাঙ্গাইল-৫ এ বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মৌন মিছিল

টাঙ্গাইল-৫ এ বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মৌন মিছিল

0 মন্তব্য