মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ১৪৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে টাঙ্গাইলে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মওলানা ভাসানীর ঐতিহাসিক দরবার হলে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও মওলানা ভাসানীর রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাঁর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন, শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অবদানের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রচার সম্পাদক ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, “মওলানা ভাসানী ছিলেন আপসহীন রাজনীতির প্রতীক। তিনি আজীবন মজলুম মানুষের পক্ষে কথা বলেছেন এবং অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন। তাঁর আদর্শ আজও আমাদের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক।” তিনি আরও বলেন, “বর্তমান সময়ে মওলানা ভাসানীর ন্যায় সাহসী ও জনবান্ধব নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়েছে। তাঁর দেখানো পথে দেশ ও জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করতে হবে।” মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা প্রফেসর এ. কে. এম. মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মাহমুদুল হক সানুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুর রহমান শফিক, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজগর আলীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মওলানা ভাসানীর আদর্শ ও দর্শন নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে নিয়মিত গবেষণা, আলোচনা সভা ও স্মরণ কর্মসূচি জোরদার করা প্রয়োজন। অনুষ্ঠানে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের সদস্য, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু’র নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহৃত ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টারসহ বিভিন্ন সামগ্রী অপসারণ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের জারি করা নির্দেশনা ও নির্বাচনী আচরণবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে শৃঙ্খলাপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে নিজেই উপস্থিত থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এসব ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণ করেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। এ সময় টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মোড় ও জনবহুল এলাকায় টাঙানো ব্যানার, ফেস্টুন এবং দেয়ালে লাগানো পোস্টার নামিয়ে ফেলা হয়। পুরো কার্যক্রমটি সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করা হয়। সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এ সময় বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মেনে চলা আমাদের সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক দায়িত্ব। আমরা চাই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। সে লক্ষ্যেই আমরা স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রচারণার সামগ্রী অপসারণ করছি।” তিনি আরও বলেন, “বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এবং সব সময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা আশা করি, সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে শালীন রাজনৈতিক সংস্কৃতি বজায় রাখবে।” এ কর্মসূচিতে বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারাও এ উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন এবং শৃঙ্খলাপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের বাইরে নির্বাচনী পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণ বাধ্যতামূলক।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বাসের চাপায় তরুণের মর্মান্তিক মৃত্যু টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বাসের চাপায় শাফিউল মুজনবীন দীপ্ত (২৫) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (রাত ১টার দিকে) ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাতের ওই সময়ে দীপ্ত একটি গাড়ি থেকে নেমে রাস্তার পাশে দাঁড়ান। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পাশ দিয়ে আসা আরেকটি বাস হঠাৎ সামনে চলে আসে। এ সময় দুই গাড়ির মাঝখানে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলেও ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।নিহত দীপ্ত মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সদ্য স্নাতক। তিনি ওই কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহর একমাত্র পুত্র। পরিবারের সঙ্গে তিনি মির্জাপুর পৌরসভার বাইমহাটি কবরস্থান এলাকায় বসবাস করতেন। পড়াশোনা শেষ করে সম্প্রতি দেশের একটি খ্যাতনামা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে দিনাজপুর অঞ্চলে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন তিনি।পরিবারের সদস্যরা জানান, কর্মস্থল দিনাজপুর থেকে বৃহস্পতিবার মির্জাপুরে ফিরছিলেন দীপ্ত। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগেও তিনি মোবাইল ফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে মির্জাপুরের কাছাকাছি পৌঁছানোর কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ফেরাই যে হবে তার শেষ ফেরা—তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।শুক্রবার বাদ জুমা মির্জাপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ সময় শিক্ষক, সাংবাদিক, সহপাঠীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।দীপ্তর অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শিক্ষক সমাজ, স্থানীয় সাংবাদিক ও শুভানুধ্যায়ীরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে হৃদয়বিদারক সড়ক দুর্ঘটনায় শাফিউল মুজনবীন দীপ্ত (২৫) নামে সিঙ্গার কোম্পানির এক তরুণ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত দেড়টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস এলাকায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত দীপ্ত মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক শহীদুল্লাহ খানের একমাত্র ছেলে। পারিবারিকসূত্রে জানা যায়, দীপ্ত মির্জাপুর পৌরসভার বাইমহাটী কবরস্থান এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন। পরিবার জানায়, সিঙ্গার কোম্পানিতে দিনাজপুর জেলা ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন দীপ্ত। সাপ্তাহিক ছুটিতে দিনাজপুর থেকে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বৃহস্পতিবার রাতে মির্জাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে মির্জাপুর বাইপাস এলাকায় পৌঁছে বাস থেকে নামার পাঁচ মিনিট আগেই তিনি মুঠোফোনে মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু বাস থেকে নামার পরপরই অজ্ঞাত একটি দ্রুতগামী যান তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি, তারা বহুবার ফোন করেও দীপ্তের সঙ্গে যোগাযোগ পাননি। পরে কিছুক্ষণ পর মির্জাপুর থানা পুলিশই ফোন করে তাদের দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে। হঠাৎ করে পরিবারের ভবিষ্যৎ ভেঙে যাওয়ায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো মির্জাপুরে। সদ্য লেখাপড়া শেষ করে স্বপ্ন নিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করা এই তরুণের অকাল মৃত্যু সহপাঠী, সহকর্মী ও এলাকাবাসীর মনে শোকের পাশাপাশি ক্ষোভও সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল সারোওয়ার বলেন, “দুর্ঘটনার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দুর্ঘটনার যানটি শনাক্তে আমাদের তদন্ত চলছে।” এদিকে এলাকাবাসী দ্রুতগামী যানবাহনের বেপরোয়া গতিকে এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করে মহাসড়কে যানবাহনের নিয়ন্ত্রণহীন চলাচল বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে উপজেলা প্রশাসনের তৎপরতায় নবম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীর বাল্য বিয়ে বন্ধ হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় প্রশাসনের উপস্থিতি ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের ফলে বাল্য বিয়ে বন্ধ হওয়ায় এলাকাজুড়ে স্বস্তি ফিরে এসেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নলুয়া গ্রামের ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীকে একই গ্রামের আবু সামা মিয়ার ১৭ বছর বয়সী ছেলে জিসান মিয়ার সঙ্গে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি চলছিল। বিষয়টি গোপন থাকলেও খবর পায় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়। খবর পেয়ে সুপারভাইজার মেহেদি হাসানের নেতৃত্বে কয়েকজন স্টাফ শিশু কন্যার বাড়িতে গিয়ে বাল্য বিয়ে বন্ধের চেষ্টা করেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি বাল্য বিয়ে বন্ধে বাধা দেন এবং কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। স্থানীয়রা জানান, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুর রহমান মাস্টার, সহ-সভাপতি মফিজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ও সহ-সাধারণ সম্পাদক মোসলেম মিয়া সহ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তির সহযোগিতায় বাল্য বিয়ের আয়োজন চলছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের টিম ফিরে এসে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। পরে রাতেই ইউএনও জোহরা সুলতানা যূথী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাইমিনুল ইসলামসহ প্রশাসনের একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাদের উপস্থিতিতে বিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং মেয়েটির মাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় ইউএনও বলেন,“উপজেলায় কোথায় বাল্য বিয়ে হচ্ছে এমন খবর পেলেই সঙ্গে সঙ্গে অভিযানে নামবে প্রশাসন। বাল্য বিয়ে রোধে জড়িত যেই হোক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অভিযান শেষে প্রশাসনের কর্মকর্তারা স্থানীয়দের সচেতন করেন এবং মেয়ের পরিবারকে আইনগত ঝুঁকি সম্পর্কে অবহিত করেন। অন্যদিকে, সামাজিকভাবে এই ঘটনায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে প্রশাসনের ভূমিকার প্রশংসা করলেও বাল্য বিয়েতে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
টাঙ্গাইলে পোষা প্রাণীসহ বিড়াল, ইঁদুর, শেয়াল ও কুকুরের কামড়ে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এসব রোগীর জন্য র্যাবিস টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক হলেও সরকারি হাসপাতালে প্রায় সারা বছরই টিকার সংকট বিরাজ করছে। এর ফলে রোগীদের বাইরে থেকে টিকা কিনতে বাধ্য হতে হচ্ছে। যাদের আর্থিক সামর্থ্য নেই, তারা টিকা না পেয়ে গুরুতর ঝুঁকিতে দিন কাটাচ্ছেন। ২৫০ শয্যার টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রতি মাসেই দেখা যায় জলাতঙ্ক রোগের র্যাবিস টিকা সংকট। শুধু র্যাবিস নয়, প্রায় এক বছর ধরে সরকারিভাবে আরআইজি (ইমিউনোগ্লোবুলিন) টিকার সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এতে নিম্নবিত্ত রোগীদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ রোগী টিকা নিতে আসেন। কিন্তু সরকারি সরবরাহ কম থাকায় অনেক রোগী টিকা না পেয়ে বিপাকে পড়েন। বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে অতিরিক্ত দামে টিকা কিনতে হচ্ছে তাদের। রোগীর স্বজনরা জানান, প্রতিটি ‘প্রাতটি’ ভ্যাকসিন (চার ডোজ) ৪৭০–৫০০ টাকায় কিনে নার্সদের দিতে হয়। র্যাবিস টিকার প্রতিটি ডোজে খরচ হয় ১২০–১২৫ টাকা। তিন ডোজ নিতে একজন রোগীর ৩৬০–৩৭৫ টাকা লাগে। ওজনভেদে এক থেকে তিনটি আরআইজি টিকা প্রয়োজন হয়, যেখানে খরচ দাঁড়ায় ৮২০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত। সরকারিভাবে টিকার সরবরাহ বন্ধ থাকলেও ফার্মেসিগুলোতে পর্যাপ্ত টিকা মজুদ রয়েছে। তবে সেখানেও সংকট দেখিয়ে দ্বিগুণ দাম আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। অনেক রোগী র্যাবিস টিকা সংকট সম্পর্কে জানেন না; হাসপাতালে এসে যখন টিকা কিনে আনতে বলা হয়, তখন বিপাকে পড়েন। হাসপাতালের নার্স ও ওয়ার্ড বয়রা জানান, বাইরে থেকে আনতে হয় বিষয়টি রোগীদের আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়—না জানালে পরে তর্কাতর্কির সৃষ্টি হয়। হাসপাতালের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে না চাইলেও জানিয়েছেন, “চাহিদা বেশি, সরবরাহ কম।” বরাদ্দ পেলেও দুই দিনেই তা শেষ হয়ে যায়। প্রতি মাসে মাত্র ৩০০–৪০০ র্যাবিস ভ্যাকসিন আসে, যা চাহিদার তুলনায় অতি অপ্রতুল। এই চিত্র শুধু জেলা হাসপাতালেই নয়—জেলার ১২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও একই অবস্থা। উপজেলা পর্যায়ে কোনো র্যাবিস কিংবা আরআইজি টিকা মজুদ নেই। দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে প্রাণীর কামড়ে আক্রান্তদের টিকা সেবা বন্ধ রয়েছে। ফলে, জেলার নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য জলাতঙ্ক প্রতিরোধ এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারি টিকার ঘাটতি না কাটলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার জাঙ্গালিয়া এলাকায় মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোকছেদুর রহমান জানান, তিন আরোহী একটি মোটরসাইকেলে করে গারোবাজার থেকে ঘাটাইলের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে অতিরিক্ত গতি ও নিয়ন্ত্রণ হারানোয় মোটরসাইকেলটি সড়কের পাশের একটি গাছের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই দুই আরোহী মারা যান এবং অপরজন গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন প্রথমে তাদের উদ্ধার করে। পরে আহত ব্যক্তিকে দ্রুত টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। নিহতদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি )আরও বলেন, “মোটরসাইকেলে তিনজন আরোহী ছিলেন। অতিরিক্ত গতি এবং হেলমেট না পরার কারণে মৃত্যুঝুঁকি আরও বেড়েছে। পরিচয় শনাক্তের পর পরিবারকে জানানো হবে।”
সাজিদ পিয়াল:আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর চালু, অনিবন্ধিত মোবাইল নিবন্ধনের সময় বাড়ল ১৫ মার্চ পর্যন্ত। দেশে প্রথমবারের মতো মোবাইল ফোনের জাতীয় পরিচিতি নিবন্ধন ব্যবস্থা—ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর)—আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে চালু হতে যাচ্ছে। তবে সুবিধার কথা বিবেচনা করে বর্তমানে ব্যবহৃত অনিবন্ধিত মোবাইল ফোনগুলো আগামী বছরের ১৫ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,দেশে মোবাইল ফোন চোরাচালান, ক্লোনড ও রিফার্বিশড ফোনের অনুপ্রবেশ রোধ, পুরোনো বিদেশি ফোনের বাজারে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ, ছিনতাই ও চুরি হওয়া ফোন শনাক্ত, অনলাইন জুয়া, এমএফএস ও ডিজিটাল অপরাধ প্রতিরোধের জন্য এনইআইআর চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বাজারে শুল্ক ফাঁকি রোধ করাও এ ব্যবস্থার অন্যতম লক্ষ্য।ব্যবসায়ীদের দাবিতে সময় বাড়ল গত তিনদিন মোবাইল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনার পর দেশজুড়ে থাকা সকল অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন নিবন্ধনের সময় ১৬ ডিসেম্বরের বদলে ১৫ মার্চ ২০২৬ পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মোবাইল আমদানিতে বাধা নেই বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়— মোবাইল ফোন আমদানিতে কোনোরূপ নিষেধাজ্ঞা নেই। কত পুরোনো ফোন বা কোন মডেল আমদানি করা যাবে, তা মন্ত্রণালয় উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে জানাবে।আমদানির বিষয়টি সরকারকে অবহিত করতে হবে।শুল্ক পুনর্নির্ধারণে এনবিআর ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে।আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্টের প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকার আহ্বান।বিজ্ঞপ্তির শেষাংশে বলা হয়, এনইআইআর চালুর মাধ্যমে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অবৈধ ফোনের ব্যবহার বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জিত হবে। তাই এ বিষয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো বা আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন করার যেকোনো অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়। আগামী ১৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে এনইআইআর উদ্বোধন করা হবে, যেখানে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও মোবাইল বিজনেস কমিউনিটির নেতারা সমর্থন জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইলে কাভার্ড ভ্যানকে ট্রাকের ধাক্কা: নিহত ২ টাঙ্গাইলের কান্দিলা এলাকায় ০৯/১২/২০২৫ ইং তারিখ রোজ মঙ্গলবার রাত প্রায় ১০টার দিকে কাভার্ড ভ্যানের পেছনে ট্রাকের ধাক্কায় দুইজন নিহত হয়েছেন। রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত কাভার্ড ভ্যানের পিছনে দ্রুতগতির একটি ট্রাক এসে ধাক্কা দিলে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা ঘটে।স্থানীয়রা জানান, রাতের অন্ধকারে হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দে তারা ছুটে এসে মহাসড়কে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান দেখতে পান। সংঘর্ষের ফলে কাভার্ড ভ্যানের পেছনের অংশ চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই দুই যাত্রী মারা যান। দুর্ঘটনার পর কিছু সময়ের জন্য মহাসড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধারসহ দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত যান দুটি রাস্তার পাশের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ফেলে। এতে কিছুক্ষণের মধ্যেই যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ট্রাকটি অতিরিক্ত গতিতে চলছিল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যের ভিত্তিতে দুর্ঘটনার সঠিক কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহতদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে এবং মরদেহ দুটি পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।এ দুর্ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়দের দাবি, মহাসড়কে দ্রুতগতির যানবাহনের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে, তাই নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।
টাঙ্গাইলে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে কাভার্ডভ্যানের পেছনে ট্রাকের ধাক্কায় চালকসহ দুই জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও তিন জন গুরুতর আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার কান্দিলা বাইপাস এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। রাতের অন্ধকারে প্রচণ্ড শব্দে দুর্ঘটনার খবর দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং স্থানীয়রা ছুটে এসে উদ্ধার কাজে সহায়তা করেন। নিহতরা হলেন—শেরপুর জেলার বাসিন্দা ট্রাকচালক সোহেল এবং টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের মুরগি ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান। নিহত দু’জনই ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান বলেন, “জামালপুর থেকে ঢাকাগামী হাঁস-মুরগি বোঝাই ট্রাকটি সামনে থাকা একটি কাভার্ডভ্যানকে পেছন থেকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ট্রাকের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই দুই জনের মৃত্যু হয়। আহত তিন জনকে স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনায় মহাসড়কে সাময়িক যানজটের সৃষ্টি হলেও দ্রুত যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান জব্দ করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। স্থানীয়দের দাবি, মহাসড়কে অতিরিক্ত গতি ও অসতর্ক ড্রাইভিংয়ের কারণে প্রায়ই এমন দুর্ঘটনা ঘটছে। তারা দুর্ঘটনা রোধে মহাসড়কে নিয়মিত নজরদারি ও কঠোর আইন প্রয়োগের দাবি জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইলের তিনটি সাংবাদিক সংগঠনের সঙ্গে নবাগত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শামসুল আলম সরকারের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজন করা হয় এ মতবিনিময় সভা। গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও সমন্বয় জোরদার করার উদ্দেশ্যে এটি ছিল পুলিশ সুপারের প্রথম আনুষ্ঠানিক পরিচিতি সভা। সভায় উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল প্রিণ্ট মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক আবু জুবায়ের উজ্জল, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শামসাদুল আখতার শামীম, সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেন, উত্তর টাঙ্গাইল টেলিভিশন রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি হাবিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।এ ছাড়া তিন সংগঠনের শতাধিক সাংবাদিক, রিপোর্টার, ক্যামেরাপার্সন ও গণমাধ্যম প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে অংশ নেন। মতবিনিময় সভায় বক্তারা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সাংবাদিকদের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তারা বলেন, টাঙ্গাইলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে সাংবাদিকদের সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সমাজ ও প্রশাসনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। নবাগত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শামসুল আলম সরকার তার বক্তব্যে বলেন,“পুলিশ ও সাংবাদিক একে অপরের পরিপূরক। আমরা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবো, আপনারা সঠিক সংবাদ প্রচার করে সমাজকে সহায়তা করবেন। একসঙ্গেই টাঙ্গাইলের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে আরও স্থিতিশীল ও উন্নত করা সম্ভব।” তিনি আরও বলেন,“আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট টাঙ্গাইলসহ দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনগণ যেন নিরাপদে, বাধাহীনভাবে ভোট দিতে পারে—এটাই হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য। কোনো অনিয়ম যাতে না ঘটে সেদিকে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবো।” পুলিশ সুপার জানান, নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশব্যাপী ৬৪ জেলায় নতুন করে পুলিশ সুপার পদায়ন করা হয়েছে। তিনি বলেন,“আমি টাঙ্গাইলে দায়িত্ব নিয়েছি নির্বাচনকে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অবাধ করতে। ভোটারদের যেন বিগত নির্বাচনের মতো কোনো দুর্ভোগে না পড়তে হয়। কেন্দ্রভিত্তিক নিরাপত্তা, টহল ও নজরদারির সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সভা শেষে সাংবাদিকরা পুলিশের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং টাঙ্গাইলের সার্বিক নিরাপত্তা ও উন্নয়ন কাজের সঙ্গে গণমাধ্যমের অংশীদারিত্ব অব্যাহত থাকবে বলে মত দেন।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ট্রাকের চাপায় মোঃ রনি মিয়া (২০) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে টাঙ্গাইল–ময়মনসিংহ মহাসড়কের ঘাটাইল ক্যান্টনমেন্টের শাহপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঘাটাইল থানার ডিউটি অফিসার এএসআই মোঃ সায়েম হোসেন। নিহত রনি মিয়া টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার জহুর আলীর ছেলে। তিনি মধুপুর তৌফিক প্লাজায় একটি দোকানে ব্যবসা করতেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য হওয়ায় তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্বজনদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রাতে রনি মোটরসাইকেলে করে মধুপুর থেকে ঘাটাইলের উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথিমধ্যে শাহপুর এলাকায় পৌঁছালে পেছন দিক থেকে একটি দ্রুতগামী ট্রাক তার মোটরসাইকেলকে সজোরে ধাক্কা দেয়। ধাক্কার পর ট্রাকটি রনিকে চাপা দিয়ে দ্রুত সটকে পড়ে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা ছুটে এসে রনির মরদেহ সড়কের পাশেই দেখতে পান এবং পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে ঘাটাইল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এএসআই মোঃ সায়েম হোসেন বলেন, “ট্রাকটি দুর্ঘটনার পরপরই পালিয়ে যায়। অন্ধকারের কারণে গাড়ির নম্বর কিংবা পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে কেউ শনাক্ত করতে পারেনি। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহসহ বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। আইনগত প্রক্রিয়া চলছে।” এদিকে, আকস্মিক এই মৃত্যুর ঘটনায় নিহতের পরিবার, স্বজন ও স্থানীয়দের মধ্যে শোকের পাশাপাশি ক্ষোভও দেখা দিয়েছে। তারা ঘাতক ট্রাক ও চালককে শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন
টাংগাইলের বাসাইলে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত। ০৯/১২/২০২৫ ইং তারিখ রোজ মঙ্গলবার বর্ণাঢ্য র্যালি, শপথ গ্রহণ ও আলোচনা সভায় দুর্নীতি প্রতিরোধে সচেতনতার আহ্বান জানান।টাঙ্গাইলের বাসাইলে যথাযোগ্য মর্যাদা, নানা কর্মসূচি এবং ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস-২০২৫। সোমবার সকালে উপজেলা প্রশাসন, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক) এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে দিনব্যাপী কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সকালে উপজেলা চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। এতে অংশ নেন উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। র্যালির শ্লোগানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার বার্তা ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। পরে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। বক্তারা বলেন, দুর্নীতি একটি রাষ্ট্রের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়। পরিবারের শিক্ষা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় প্রতিটি স্তরে সততা, স্বচ্ছতা এবং নৈতিকতা প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন সম্ভব। তারা আরও উল্লেখ করেন, তরুণ প্রজন্মকে সঠিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করে দুর্নীতি প্রতিরোধে সম্পৃক্ত করাই দীর্ঘমেয়াদী সমাধান। সভা শেষে সকল উপস্থিতির অংশগ্রহণে দুর্নীতি বিরোধী শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। শপথে নৈতিকতা চর্চা, দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আচরণ এবং যেকোনো ধরণের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার অঙ্গীকার করেন সবাই।দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা, পোস্টার প্রদর্শনী, রচনা ও কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পরে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। দিবসটি উদ্যাপনের মধ্য দিয়ে বাসাইলবাসীর মাঝে দুর্নীতি প্রতিরোধে নতুন সচেতনতা সৃষ্টি হয়, যা স্বচ্ছ ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
সাজিদ পিয়াল: নাগরপুর–টাঙ্গাইল সড়কের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন। নাগরপুর থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত সড়কের অবর্ণনীয় ভোগান্তি, দীর্ঘদিনের খানা-খন্দক, এবং চলাচলের চরম দুরবস্থার প্রতিবাদে ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও পরিবহনচালকদের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৭ ডিসেম্বর ২০২৫) সকাল ১১টার দিকে নাগরপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কয়েক শতাধিক মানুষ এ মানববন্ধনে অংশ নেন। হাতে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে তারা দ্রুত সড়ক সংস্কার ও কাজের গতি বাড়ানোর দাবি জানান। অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, নাগরপুর–টাঙ্গাইল প্রধান সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। কয়েক কিলোমিটারজুড়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে, খানাখন্দে যাত্রীবাহী বাস, অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এতে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা, নষ্ট হচ্ছে যানবাহন, আর ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ। বক্তারা আরো বলেন, বিভিন্ন সময় সড়ক সংস্কারের আশ্বাস দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। তাই অবিলম্বে রাস্তার কাজ শুরু করে দ্রুত শেষ করার দাবি জানান তারা। অন্যথায় আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দেন সংগঠনগুলো। মানববন্ধনে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, পরিবহন শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
ওয়াজের মঞ্চে স্ট্রোক, হাসপাতালে বক্তার মৃত্যু তাফসির মাহফিলের মঞ্চে তখন ছিল এক গভীর, নিবিড় নীরবতা। মঞ্চ জুড়ে বসে থাকা হাজারো মানুষ প্রিয় বক্তার বক্তব্যে ডুবে ছিলেন। তাঁর কণ্ঠের মাধুর্য, হৃদয়ছোঁয়া উপস্থাপনা, তিলাওয়াত ও ব্যাখ্যা—সবকিছুতেই মুগ্ধ হয়ে শ্রোতারা মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন। ঠিক এমন সময়ই ঘটে যায় এক হৃদয়বিদারক ঘটনা, যা মুহূর্তেই পুরো মাহফিলস্থলকে স্তব্ধ করে দেয়। বয়ানরত অবস্থায় হঠাৎ করেই বক্তার ব্রেন স্ট্রোক হয়। তিনি হাতের মাইক্রোফোনসহ মঞ্চে লুটিয়ে পড়েন। প্রথমে অনেকেই ভেবেছিলেন তিনি হয়তো অসুস্থ বোধ করায় বসে পড়েছেন; কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। মঞ্চের পাশে থাকা আয়োজকরা ছুটে গিয়ে তাঁকে ধরার চেষ্টা করেন, শ্রোতারা দাঁড়িয়ে যান, অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। তৎক্ষণাৎ আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে তাঁকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই জানান, তাঁর অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রেখে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবার পরও তাঁকে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি। চিকিৎসাধীন অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করেন তিনি। এই আকস্মিক মৃত্যুর খবরে মাহফিল, এলাকা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেমে আসে গভীর শোকের ছায়া। বহু মানুষের জীবনে ছোঁয়া রেখে যাওয়া এই বক্তার মৃত্যু সবাইকে ব্যথিত করেছে। তাঁর বয়ান, ইসলামের প্রতি ভালোবাসা, মানুষের মন জয়ের ক্ষমতা—সবকিছুই মানুষ স্মরণ করছে গভীর আবেগে। স্থানীয় ধর্মীয় অঙ্গন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সবাই এই ক্ষতিকে অপূরণীয় বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিভিন্ন মসজিদ ও মাদরাসায় দোয়ার আয়োজন করা হচ্ছে।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়নে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে কাকুয়া হাই স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত এই মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন কাকুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহাদত হোসেন সাহা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল সদর আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এবং কেন্দ্রীয় বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজগর আলী, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার রাশেদুল আলম রাশেদ, সদর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-সচিব এডভোকেট আজিমুদ্দিন বিপ্লব, জেলা মহিলা দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মমতাজ করিম, কাকুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান খাদেমুল ইসলাম এবং কাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে স্থানীয় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী অংশগ্রহণ করেন। উপস্থিতরা সকলেই দেশরত্ন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করেন। অনুষ্ঠানে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দেশে গণতন্ত্রের সুরক্ষা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তারা আশা প্রকাশ করেন, বিএনপির নেত্রী দ্রুত সুস্থ হয়ে দেশের মানুষের জন্য আবারও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন। মাহফিলের শেষে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালিত হয়, যেখানে উপস্থিত সকল নেতা-কর্মী দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করেন।
সাজিদ পিয়াল: টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের কর্মকাণ্ডকে আরও গতিশীল, সমন্বিত ও জনবান্ধব করতে রিজার্ভ অফিস এবং পুলিশ লাইন্সের বিভিন্ন ইউনিটের সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন জেলা পুলিশ সুপার জনাব মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার। শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তিনি পুলিশ লাইন্স, টাঙ্গাইলের আরআই অফিস, মেজর অফিস, ডি-ষ্টোর, সি-স্টোর, মেস, ব্যারাক, যানবাহন শাখা, রেশন স্টোরসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব দপ্তরের স্থাপনা, অবকাঠামো এবং দৈনন্দিন কার্যক্রম বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করেন। পরিদর্শন চলাকালে পুলিশ সুপার মহোদয় প্রতিটি ইউনিটের সার্বিক শৃঙ্খলা, কার্যক্ষমতা, জনসেবা প্রদানের প্রস্তুতি, ফোর্সের কল্যাণব্যবস্থা এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা গভীরভাবে মূল্যায়ন করেন। তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ, দপ্তরপ্রধান, কর্মকর্তা ও ফোর্স সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং তাদের কর্মপরিবেশ, চ্যালেঞ্জ ও প্রয়োজনীয় উন্নয়নসংক্রান্ত তথ্য শুনে তা সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি বলেন, পুলিশের প্রতিটি ইউনিটই জননিরাপত্তা ও জনসেবার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। তাই দাপ্তরিক কার্যক্রমে শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা, দায়িত্বশীলতা ও পেশাদারিত্ব অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। জনগণের আস্থা অর্জনই পুলিশের মূল শক্তি—এই লক্ষ্য সামনে রেখে সকল কার্যক্রম আরও দ্রুত, দক্ষ ও জনবান্ধবভাবে সম্পন্ন করার নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি। পুলিশ সুপার মেস ও ব্যারাকে অবস্থানরত ফোর্সদের খাবার ব্যবস্থা, আবাসন, স্বাস্থ্যবিধি, বিশ্রামাগার, নিরাপত্তা এবং অন্যান্য কল্যাণমূলক সুবিধা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনাও দেন। যানবাহন শাখার কার্যক্রম, রক্ষণাবেক্ষণ, লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা এবং জরুরি সেবা প্রদানের প্রস্তুতি মূল্যায়ন করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন স্টোর ও দপ্তরের নথিপত্র ব্যবস্থাপনা, উপকরণ সংরক্ষণ এবং কার্যপ্রবাহ আরও উন্নত করার পরিকল্পনা নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। পরিদর্শনকালে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, পুলিশ লাইন্সে কর্মরত বিভিন্ন দপ্তরের ইনচার্জ, কর্মকর্তা ও ফোর্স সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সামগ্রিকভাবে এই পরিদর্শনকে পুলিশ সদস্যরা একটি উৎসাহব্যঞ্জক দিকনির্দেশনা হিসেবে দেখছেন, যা ভবিষ্যতে জেলা পুলিশের সেবা ও কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী ও জনমুখী করবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেছেন।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে মাদকবিরোধী অভিযানকে কেন্দ্র করে থানা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। অভিযোগ রয়েছে—মাদক সেবনের সময় হাতেনাতে চার যুবককে আটক করা হলেও রহস্যজনকভাবে তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মাত্র একজনকে মাদক মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিকালে উপজেলার রায়ের বাশালিয়া এলাকায়। চারজনকে আটকের পরের দিন শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রিপন শেখ নামে এক যুবককে ২০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে চরবামনহাটা এলাকায় এসআই শরীফ হায়দার আলী ও এএসআই অন্তর কুমার দাসের নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় চারজনকে মাদক সেবনের অবস্থায় হাতেনাতে ধরা হলেও তিনজনকে বিভিন্ন তদবিরে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ঘটনাস্থলে পাওয়া মাদকের পরিমাণ ও মামলায় উল্লেখিত পরিমাণ নিয়েও দেখা দিয়েছে অসঙ্গতি। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ভূঞাপুর থানার ফেসবুক পেজে ‘মাদকসহ একজন আটক’ শিরোনামে পোস্ট দেওয়ার পর নানা প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন নেটিজেনরা—“হাতেনাতে ধরার পরও তিনজনকে ছেড়ে দিল কেন?”“আইন কি সবার জন্য সমান নয়?”“কার নির্দেশে বা কী বিনিময়ে এ সিদ্ধান্ত?” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বলেন, “মাদক নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কঠোর ভূমিকা আমাদের প্রত্যাশা। কিন্তু এমন ঘটনা মানুষের আস্থা নষ্ট করছে।” এ বিষয়ে অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া এসআই শরীফ হায়দার আলী বলেন, “একসঙ্গে চারজন ছিল ঠিকই, কিন্তু মাদক পাওয়া গেছে কেবল একজনের কাছ থেকে। তাই রিপন শেখের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অন্য তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।” ভূঞাপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, “ফেসবুক পোস্টে মন্তব্য দেখার পর এসআইকে জিজ্ঞেস করি। তিনি জানান, তিনজনের কাছে মাদক পাওয়া যায়নি। থানা থেকে মাদকের বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করা হয়। তদবিরের কোনো সুযোগ নেই।”তিনি আরও বলেন, “আমি কীভাবে কাজ করি, টাঙ্গাইলের সব সাংবাদিকরা জানেন।” এদিকে পুরো ঘটনাই এখন স্থানীয়ভাবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে—চারজন আটক হয়ে তিনজন মুক্ত, আর একজনের বিরুদ্ধে মামলা—এসব প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব জানতে আগ্রহী এলাকাবাসী।
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে সংবাদ প্রকাশের জেরে এক সাংবাদিককে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মারধর ও মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ২টার দিকে উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের নারান্দিয়া গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে দৈনিক নিরপেক্ষ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি ও কালিহাতী প্রেসক্লাবের সদস্য জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করা হয়। রোববার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় টাঙ্গাইলের স্থানীয় সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। তারা দ্রুত ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০ আগস্ট কালিহাতীতে শওকত তালুকদার নামে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ৩০ লাখ টাকা প্রতারণার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন। ওই সংবাদ সম্মেলনের খবর সংগ্রহ ও প্রকাশ করেন সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম। সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই শওকত তালুকদারের স্ত্রী সাংবাদিক জাহাঙ্গীরের প্রতি ক্ষুব্ধ হন এবং বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দেওয়া শুরু করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরবর্তীতে,১৭ নভেম্বর শওকত তালুকদারের স্ত্রী বাদী হয়ে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন। স্থানীয় সাংবাদিকদের দাবি—এটি পুরোপুরি হয়রানিমূলক ও সংবাদ প্রকাশের প্রতিশোধ নিতে করা মিথ্যা মামলা। পরিবারের অভিযোগ, শনিবার গভীর রাতে হঠাৎ কয়েকজন পুলিশ সদস্য বাড়িতে ঢুকে কোনো ধরনের ওয়ারেন্ট বা কারণ ব্যাখ্যা ছাড়াই জাহাঙ্গীরকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায়। গ্রেফতারের সময় তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় বলেও পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। জাহাঙ্গীরের বৃদ্ধ মা বলেন, “রাতের অন্ধকারে এত পুলিশ কেন আসলো বুঝিনি। ছেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় মারধরও করেছে। আমরা কিছু বলার সুযোগও পাইনি।” কালিহাতী প্রেসক্লাব, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবসহ জেলার বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন ঘটনাটির নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। কালিহাতী প্রেসক্লাবের সভাপতি বলেন,“একজন সাংবাদিককে মধ্যরাতে এভাবে তুলে নেওয়ান্যক্কারজনক। এটি স্পষ্টভাবে গণমাধ্যমকে ভয় দেখানো ও স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর আঘাত। আমরা দ্রুত তদন্ত এবং জাহাঙ্গীরের মুক্তি চাই।” পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী নারী প্রথমে টাঙ্গাইল আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশনার পর টাঙ্গাইল সদর থানা পুলিশ মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করে।সদর থানার এক কর্মকর্তা বলেন,“আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী গ্রেফতার করা হয়েছে। মারধরের অভিযোগ সত্য নয়।” ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়েছে। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন—মামলা তদন্তের আগেই কেন রাতের আঁধারে সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হলো? এটি কি সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর চেষ্টামানবাধিকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করেছেন।
সাজিদ পিয়াল: টাঙ্গাইল জেলার সকল থানার অফিসার ইনচার্জদের (ওসি) বদলিজনিত বিদায় সংবর্ধনা। অত্যন্ত আন্তরিক ও মর্যাদাপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা পুলিশ, টাঙ্গাইল-এর আয়োজনে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের প্রশাসনিক ও পুলিশ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন টাঙ্গাইল জেলার পুলিশ সুপার জনাব মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার। অনুষ্ঠানে তিনি বিদায়ী অফিসার ইনচার্জদের দীর্ঘদিনের নিষ্ঠাপূর্ণ দায়িত্বপালনের প্রশংসা করেন এবং তাঁদের প্রতিটি থানায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, জনসেবা, মানবিক আচরণ ও পেশাদারিত্বের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। বিদায়ী ওসিদের স্মৃতিচারণে বক্তারা বলেন, তাঁরা দায়িত্ব পালনকালে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতেও ধৈর্য, দক্ষতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন। নানা গুরুত্বপূর্ণ অভিযান, অপরাধ দমন, অপরাধ তদন্তসহ থানা পরিচালনার ক্ষেত্রে তাঁদের অবদান জেলার পুলিশ প্রশাসনকে আরও শক্তিশালী করেছে। এসময় পুলিশ সুপার তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন— “জেলার সকল থানার অফিসার ইনচার্জগণ দায়িত্ব পালনকালে পেশাদারিত্ব, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন। প্রতিটি থানায় তাঁদের নেতৃত্বে জননিরাপত্তা রক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা সহজ হয়েছে। তাঁদের ভবিষ্যৎ জীবন ও কর্মজীবনের সফলতা কামনা করছি।” অনুষ্ঠানে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিদায়ী কর্মকর্তাদের হাতে সম্মাননা স্মারক ক্রেস্ট তুলে দেন পুলিশ সুপার। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, একজন ওসির ভূমিকা শুধু প্রশাসনিক দায়িত্বে সীমাবদ্ধ নয়; বরং একজন নেতৃত্বদাতা হিসেবে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। পরবর্তীতে টাঙ্গাইল জেলার সকল থানা’র নবাগত অফিসার ইনচার্জদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান পুলিশ সুপার জনাব শামসুল আলম সরকার। তিনি নবাগতদের উদ্দেশে বলেন, দায়িত্ব পালনকালে সততা, মানবিকতা, সেবা ও শৃঙ্খলার মূলনীতি বজায় রেখে জনগণের আস্থা অর্জন করাই হবে তাঁদের প্রধান লক্ষ্য। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা, থানার প্রতিনিধিসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে বিদায়ী অফিসারদের বিদায় ও নবাগত ওসিদের জন্য শুভকামনা জানিয়ে আয়োজনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
আজ ৭ ডিসেম্বর রোববার সকালে টাঙ্গাইলের নাগরপুর সরকারি কলেজের সামনে টাঙ্গাইল-আরিচা আঞ্চলিক সড়কের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করেছে নাগরপুরের জনসাধারণ। সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এ মানববন্ধনে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবী ও শিক্ষার্থী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং স্থানীয় সাধারণ মানুষ অংশ নেন। নাগরপুর-টাঙ্গাইল-আরিচা আঞ্চলিক এ গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন কাজের নামে অচল হয়ে আছে। সড়ক প্রশস্তকরণ ও নতুনভাবে সংস্কারের লক্ষে কয়েক বছর আগে সড়কের দু’পাশের গাছ কেটে ফেলা হয় এবং রাস্তার উপরিভাগ খুঁড়ে কাজ শুরুর পর অল্প কিছু অংশে নামমাত্র কাজ করে পুরো প্রকল্পটি কার্যত অরক্ষিত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়। ফলে নাগরপুর থেকে টাঙ্গাইল বা মানিকগঞ্জমুখী যাত্রীদের প্রতিদিনই চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বৃষ্টির মৌসুমে রাস্তার খানাখন্দে জলাবদ্ধতা আর শুকনা মৌসুমে ধুলাবালিতে পথচারী ও যানবাহন চালকদের নাজেহাল হতে হচ্ছে। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করলেও এ ভোগান্তি যেন চিরস্থায়ী রূপ নিয়েছে। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “এই সড়কটি নাগরপুরবাসীর একমাত্র ভরসা। কিন্তু বছরের পর বছর সংস্কারের নাম করে কাজ বন্ধ রেখে আমাদের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করা হচ্ছে। রোগী, শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী মানুষের জীবন প্রতিদিন ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে যায়।” তারা আরও বলেন, “দ্রুত প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ শুরু না করলে আগামীতে আরও বড় আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।” এসময় ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের নাগরপুর শাখার সভাপতি মো. বাবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মুফতি আল-আমিন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মো. রানা হাসান, কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, সিএনজি ও অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা অবিলম্বে টাঙ্গাইল-আরিচা আঞ্চলিক সড়কের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে নাগরপুরবাসীর দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ দূর করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”
তিনি ছিলেন মানবজাতির আদর্শ। তিনি অত্যন্ত উদার ও বিনয়ী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক এবং একজন সাহসী যোদ্ধা। এছাড়াও তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক, একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন সফল প্রচারক ছিলেন। তিনিই উত্তম চরিত্র ও উদারতার একমাত্র উৎস। তিনি সকলের আদর্শহীন এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব। যার প্রেমে, দুনিয়া মাতাল। তিনি আমার আদর্শ, তিনি আমার নেতা। তিনি আমার নবী, আমাদের নবী এবং সকলের নবী। তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) তিনি সর্বোত্তম আদর্শ। সমস্ত মানবজাতির জন্য করুণা। অন্ধকারে নিমজ্জিত বিশ্বের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে। তার অসাধারণ চরিত্র, মাধুর্য এবং অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব সবাইকে অবাক করেছে। মুমিনের চঞ্চল হৃদয় তাকে এক নজর দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকে। কবি কাজী নজরুল বলেছেন: “বিচ্ছেদের রাত ছিল একাকার কান্নার ভোর; আমার মনে শান্তি নেই, আমি কাঁদছি। হে মদিনাবাসীর প্রেমিক, আমার হাত ধর।" তার নিষ্কলুষ চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।" (সূরা আল-আহজাব, আয়াত 21)। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আজ কিছু লোক সেই নবীর সম্মানকে অবমাননা করছে। হৃদয় ভেঙ্গে যায়। আমাদের ক্ষমা করুন, হে নবী! তিনি তার অবিস্মরণীয় ক্ষমা, উদারতা, সততা, নম্রতা প্রভৃতির বিরল মুগ্ধতা দিয়ে বর্বর আরব জাতির আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য তারা তাকে ‘আল-আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তারা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকার করেছিল যে তিনি নম্র এবং গুণী ছিলেন। টাকা দিয়ে নয়, ভালো ব্যবহার দিয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে জয় করেছেন। আল্লাহ তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহৎ চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা আল কালাম, আয়াত ৪)। তিনি কখনো মানুষকে তুচ্ছ করেননি। আত্মসম্মানবোধে তিনি কাউকে তুচ্ছ মনে করেননি। তিনি বিশ্বের হৃদয়ে উচ্চতর চরিত্রের একটি অনুপম মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। নম্রতা তার চরিত্রে সর্বদা উপস্থিত ছিল। পৃথিবীর মানবতার কল্যাণে তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল শ্রেষ্ঠ আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবে। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে আমার উত্তম চরিত্র পূর্ণ করার জন্য প্রেরিত করা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত) ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং আচার-আচরণে অত্যন্ত বিনয়ী। দুর্বল ব্যক্তিকে কড়া কথায় আঘাত করবেন না। তিনি কোন মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অসাধ্য সাধন করতে বাধ্য করেননি। গরিব-অসহায় মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। তিনি লোকদেরকে তাদের আচরণে অপ্রয়োজনীয় রাগ ও রাগ থেকে সর্বদা বিরত থাকার উপদেশ দিতেন এবং মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন এবং যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করেন।” (মিশকাত) কাফেররাও তার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সদয় ও নম্র আচরণ পেয়েছিল। তার অনুসারীরা তাকে উচ্চ সম্মানের সাথে ধরেছিল কারণ তিনি খুব নমনীয় এবং নম্র ছিলেন। হজরত আয়েশা (রা.) তার ভদ্র আচার-আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘নবী (সা.) রূঢ় বক্তা ছিলেন না, প্রয়োজনের সময়ও তিনি কঠোর ভাষা ব্যবহার করতেন না। প্রতিহিংসা তার সাথে ছিল না মোটেও। মন্দের বিনিময়ে ভালোই করেছেন। সব ক্ষেত্রেই তিনি ক্ষমা পছন্দ করতেন। তিনি লোকদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন, “আল্লাহর ইবাদত কর, করুণাময় প্রভু, ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, সালাম দাও এবং এসব কাজের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ কর। তিনি উত্তর দিলেন, "ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং অপরিচিত সকলকে সালাম করা।" (বুখারী ও মুসলিম)। মহানবী (সা.)-এর মর্যাদাকে সম্মান করা মুসলমানদের ধর্মীয় কর্তব্য এবং প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের মৌলিক অংশ।
মাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৩৩৪তম পর্বে নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নিয়ামত কমে যাবে কি না, সে বিষয়ে ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া। প্রশ্ন : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে? উত্তর : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা কুফরি। এটা বড় কুফরি না, ছোট কুফরি। যদি আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে থাকেন, তাহলে তাঁরা কুফরি কাজ করে থাকলেন। এ জন্য আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার সঙ্গে কুফরি করো না।’ আল্লাহ যে নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহর নিয়ামত লাভ করে সুন্দর জীবনযাপন করা, এটা যদি কেউ আল্লাহর কাছে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরতে না পারে, তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া করলেন না, কুফরি করলেন। এই জন্য আল্লাহ সুরা দোহার শেষ আয়াতে বলেছেন, ‘তুমি তোমার রবের নিয়ামত প্রকাশ করো। কারণ, তোমার কাছে যখন নিয়ামত আসছে, তখন আল্লাহ পছন্দ করেন যে তুমি আল্লাহর এই নিয়ামতের বিষয়টি তুলে ধরবে।’ আল্লাহর কাছে বলবে, আল্লাহ আমাকে এই নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ নিয়ামতকে বান্দার কাছে তুলে ধরার জন্য বলেছেন, বহিঃপ্রকাশ করার জন্য বলেছেন। বহিঃপ্রকাশ দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো নিয়ামতের ব্যবহারের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করা। দ্বিতীয়ত, নিয়ামতের বিষয়টি হলো মানুষের কাছে নিয়ামত তুলে ধরবে। যাতে করে আল্লাহর প্রশংসা প্রকাশ পায়। নিয়ামতের শুকরিয়া যদি কেউ আদায় না করেন, তাহলে কুফরি হবে। আল্লাহ বলেছেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করে থাক, তাহলে আমি আরো বৃদ্ধি করে দেব। বান্দারা যখন নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে, তখন আল্লাহ আরো নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করে দেন। আর যদি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা হয়, তাহলে আল্লাহ নিয়ামত কমিয়ে দেবেন এবং সেইসঙ্গে আরেকটি কঠিন বাণী আল্লাহ বলেছেন, ‘জেনে রাখো আল্লাহর কঠিন আজাবও তোমাদের জন্য অবধারিত থাকবে।’ নিয়ামতের শুকরিয়া শুধু মুখে আদায় করা যথেষ্ট নয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর শুকরিয়া আমলের মাধ্যমে আদায় করো।’ সুতরাং বান্দারা শুকরিয়া আদায় করবে। শুকরিয়ার অনেকগুলো দিক রয়েছে, তার মধ্যে আমলের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করা হলো শুকরিয়ার সর্বোচ্চ স্তর।
নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৯২৯তম পর্বে ই-মেইলের মাধ্যমে কানিজ নাহার দিপা জানতে চেয়েছেন, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? অনুলিখন করেছেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ। প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? উত্তর : না দোয়ার জন্য আলাদা কোনো মাহফিল নেই। এটা আসবে কেন? আমরা একটা জায়গা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি কাজ করছি। কিন্তু সেই কাজটি ভুল করে আরও বড় ভুলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমাদের সমাজে একটি প্রথা একেবারে ছেয়ে গেছে। যেমন—একজন মারা গেলে তার জন্য মিলাদ-মাহফিল করা কিংবা কূলখানি করা। কিন্তু এগুলো সবই বেদআতি কাজ। এগুলো সঠিক কাজ নয়। অনেকে মনে করছে, দোয়া-মাহফিল করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা একদমই নয়। এসব ইসলামে অনুমোদন দেয়নি। এইগুলো পুরোটাই বেদআত। মানুষ চাইলে যে কোনো সময় কিংবা যে কোনো জায়গা থেকে দোয়া করতে পারবেন। দোয়ার সঙ্গে মাহফিল কিংবা আলাদা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা জায়েজ নেই। আশা করি, আপনি বুঝতে পেরেছেন।
র্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি ও চীনের ডিপসিকের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতার নয়, বরং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চ্যাটজিপিটি দীর্ঘদিন ধরে ব্লগ লেখা, গবেষণা, প্রোগ্রামিংসহ নানান কাজে অপরিহার্য টুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি চীনের তৈরি ডিপসিক এআই জগতে নতুন আলোড়ন তুলেছে। তারা দাবি করছে, তুলনামূলক কম চিপ ব্যবহার করেই অত্যাধুনিক এআই সেবা দেওয়া সম্ভব, যেখানে ওপেনএআই-এর বিশাল মডেলগুলোর জন্য ১৬,০০০ বা তারও বেশি চিপ প্রয়োজন হয়, সেখানে মাত্র ২০০০ চিপ দিয়ে ডিপসিক কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। দুই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। ✅ চ্যাটজিপিটি: বিস্তৃত বিশ্লেষণ ও গভীর গবেষণা উপস্থাপন করতে পারে, যা একাডেমিক ও জটিল সমস্যার সমাধানে সহায়ক। ✅ ডিপসিক: দ্রুত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে পারে, যা তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাশী ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী। লেখালেখির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি কেবল ধারণা ও প্লটের কাঠামো গড়ে তোলে, যেখানে ডিপসিক প্রায় পুরো গল্প তৈরি করে দিতে পারে। একইভাবে, কোডিংয়ের ক্ষেত্রেও ডিপসিক কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত সমাধান দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ডিপসিকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সংরক্ষণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের সরকার ইতোমধ্যেই ডিপসিকের ডেটা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওপেনএআই নিজেও অতীতে অনুমতি ছাড়া মানুষের লেখা ডেটা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, যা এখন ডিপসিকের বিরুদ্ধে উঠছে। ডিপসিকের সাফল্যের ফলে এআই চিপের বাজারেও বড় প্রভাব পড়েছে। এনভিডিয়া, যারা উন্নত চিপ তৈরিতে বিশ্বব্যাপী অগ্রগণ্য, তাদের শেয়ারের মূল্য একদিনে প্রায় ১৭% কমে গেছে। কারণ, কম শক্তিশালী হার্ডওয়্যারেও কার্যকর এআই সম্ভব হলে উচ্চমূল্যের উন্নত চিপের বাজার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়, তবে ডিপসিকের উদ্ভাবন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই চীনে উন্নত চিপ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কম খরচে ভালো এআই তৈরি হলে মার্কিন প্রযুক্তি খাতেরও লাভ হতে পারে। এই প্রতিযোগিতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎকে আরও উন্নত ও বহুমাত্রিক করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান দরকার, সেখানে হয়তো ডিপসিক এগিয়ে থাকবে, আর যেখানে গবেষণা ও জটিল বিশ্লেষণের প্রয়োজন, সেখানে চ্যাটজিপিটির মতো বৃহৎ মডেলগুলো প্রাধান্য পাবে। শেষ পর্যন্ত, এই প্রতিযোগিতাই হয়তো এআই প্রযুক্তিকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করবে।