কওমী অঙ্গন

হেফাজতের দাবি: ৫ মে ২০১৩ শাপলা চত্বরে ৯৩ জন নিহত, চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করছে সংগঠনটি

reporter-icon
ইসলামিক ডেক্স: ইসলামাকি মিডিয়া
আগস্ট ১৬, ২০২৫ | 0

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত হওয়া ব্যক্তিদের একটি প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকায় ৯৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তালিকাটি চূড়ান্ত নয় এবং যাচাই-বাছাই শেষে সংখ্যা আরও বাড়তেও বা কমতেও পারে।

হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা মুঈনুদ্দিন রাব্বানী বলেন, “এই তালিকা চূড়ান্ত নয়। সংখ্যা বাড়তেও পারে, কমতেও পারে। আমরা চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করছি, যা চলতি মাসেই প্রকাশ করার আশা রাখি।”

তিনি আরও জানান, সংগঠনের শীর্ষ নেতারা নিয়মিত বৈঠক করছেন এবং চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।

এই তালিকা প্রকাশের উদ্যোগটি হেফাজতের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা দায়েরের অংশ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, মানবাধিকার সংস্থা অধিকার এর আগে পৃথকভাবে ৬১ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল।

২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর হেফাজতে ইসলাম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (ICT) প্রসিকিউশন শাখায় একটি অভিযোগপত্র দাখিল করে, যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আরও ৪৯ জনকে ওই ঘটনার জন্য অভিযুক্ত করা হয়। একই বছরের ১৮ আগস্ট আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল, যেখানে হাসিনাসহ ৩৩ জনের নাম ছিল এবং গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে হেফাজতে ইসলাম রাজধানীর শাপলা চত্বরে একটি সমাবেশ করে ধর্ম অবমাননার শাস্তির দাবিতে আইন প্রণয়নের আহ্বান জানায়। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবি সমন্বয়ে একটি যৌথ অভিযান চালানো হয়।

স্থানীয়রা জানান, রাতে অভিযানের সময় পুরো এলাকাজুড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় এবং গুলির শব্দ শোনা যায়। তবে কতজন নিহত হয়েছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয় এবং এ নিয়ে বিতর্ক রয়ে গেছে।

সর্বাধিক পঠিত
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির ঢাকা বিভাগীয় ব্যুরো চীফ হলেন সাংবাদিক মোঃ মনিরুজ্জামান।

দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”

বাংলাদেশের বৃহত্তম এনজিও সংস্থা"আশা"উদ্যোগে গোপালপুরে সোনামুই গ্রামে হয়ে গেল মেডিকেল ফ্রি ক্যাম্পিং

বাংলাদেশের বৃহৎ এনজিও সংস্থা "আশা"এর উদ্যোগে হয়ে গেল ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন যেখানে ফ্রিতে চিকিৎসা দেওয়া হয় এলাকার বিভিন্ন পেশাজীবী এবং কর্মজীবী মানুষের মধ্যে। ২৪ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার সোনামুই গ্রামে সকাল থেকে এই ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন করা হয় আশায় এনজিও হেমনগর শাখার উদ্যোগে এটি বাস্তবায়িত করা হয়। উক্ত ক্যাম্পেইনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মী এবং মেডিকেল অফিসারসহ অন্যান্য সেবিকারা। আশা এনজিও কর্তৃক ক্যাম্পেইনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন "আশা" হেমনগর ব্রাঞ্চের পক্ষথেকে আশা এনজিওর এই ক্যাম্পেইনে গ্রামের সকল পেশাজীবীর মানুষেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ক্যাম্পেইনটিতে অংশগ্রহণ করেন এবং তারই মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সঠিক ভাবে নিরূপণ করতে সহযোগিতা করেন। আশা এনজিওর মাধ্যমে ক্যাম্পেইন করে মানুষের জন্য সময় উপযোগী এবং প্রয়োজনীয় একটি বিষয় হয়ে দাঁড়াবে যেটি গ্রামের মানুষের মধ্যে সচেতনতা এবং স্বাস্থ্য সঠিকভাবে পর্যালোচনা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই উদ্যোগে এলাকাবাসী অত্যন্ত প্রাণবন্ত ভাবে উৎফুল্ল প্রকাশ করেছে। উক্ত ক্যাম্পেইনে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিকবৃন্দ এবং সাধারণ মানুষ। এবং তাদের ক্যাম্পেইন ডাক্তার সঠিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করেছে। আশা এনজিও আগামী দিনগুলোর জন্য এইরকম ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি ধাপ হিসাবে গণ্য হবে।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লা পাড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদল শাখার উদ্যোগে কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবকদল সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লা পাড়া ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার  বিকালে সদর উপজেলার স্থানীয় বেতগঞ্জ বাজাএই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আবুল কাশেম দুলু সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এডভোকেট দীপংঙ্কর বনিক সুজিতের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক মনাজ্জির হোসেন। সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক সুহেল মিয়া, শাহজাহান মিয়া, এডভোকেট আব্দুল আহাদ জুয়েল, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মুজাব্বির হোসেন অপু, ইমরান হোসেন শ্যামল, বিপ্লব খান, মো:শামিম আহমদ, সেচ্ছাসেবক দলের দপ্তর সম্পাদক সাদিকুর রহমান চৌধুরী, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আতাউর চৌধুরী শাহীন প্রমুখ।  এ ছাড়া ও উপস্থিত ছিলেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার আলম, লিয়াকত আলী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আতহাব চৌধুরী হাসান, শাখাওয়াত হোসেন পলাশ, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক  ইমন আহমেদ, ফয়সাল আহমেদ, মিছবাহ হোসেন, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মহিম উদ্দিন, জেলা যুবদলের সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মঈনুদ্দিন আহমেদ রিপন,সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আব্দুল কাইয়ুম সৌরভ,  বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম, ময়না মিয়া,স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রুজেল আহমেদ, আবুল হাসনাত, জেলা ছাত্রদল নেতা ইয়াহিয়া হাসান প্রমুখ। এ সময় সদর উপজেলা ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।  বক্তারা বলেন,বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের দুঃসময়ে যারা রাজপথে নির্যাতিত ও নিপিিতড় হয়েছেন, তাদের যথাযথ মূল্যায়নের ভিত্তিতেই ভবিষ্যতের ইউনিয়ন কমিটি গঠন করতে হবে। আওয়ামী লীগ ঘেঁষা বা ফ্যাসিস্টদের সাথে সম্পৃক্ত কোনো ব্যক্তিকে কমিটিতে রাখা যাবে না বলেও তারা দাবি জানান। দুর্দিনে যারা আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন তাদেরকে কমিটিতে মুল্যায়ন করা হবে। তারা বলেন,সুনামগঞ্জে জাতীয়তাবাদি শক্তির প্রাণপূরুষ এবং বিগত স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে জেল জুলুম,হুলিয়া মাথায় নিয়ে এই সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা কেবল জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক ও বর্তূমান জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-৪(সদর ও বিশ্বম্ভরপুর) আসনে ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী এ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম নুরুলের নেতৃত্বে আমরা রাজপথে ছিলাম এবং আগামী নির্বাচনে এই আসনে জনপ্রিয় ধানের শীষের প্রার্থী একমাত্র নুরুল ইসলাম নুরুলকে বিএনপির প্রার্থী করতে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া,ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নিকট তৃণমূলের নেতৃবৃন্দরা জোর দাবী জানান।

টাঙ্গাইল শহরের গৌরঘোষ দধি ভাণ্ডারে ভ্রাম্যমান আদালতের জরিমানা

(২২ অক্টোবর) সকালে টাঙ্গাইল পৌর এলাকার পার্ক বাজার সংলগ্ন গৌর ঘোষ দধি ও মিষ্টান্ন ভান্ডারে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানটি পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল। তিনি তার বিশেষ মনিটরিং টিম নিয়ে দোকানে থাকা দইয়ের উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ না থাকা, বেশ কিছু পরিমাণ পচে যাওয়া দই দোকানে সংরক্ষণ করা এবং মিষ্টান্ন তৈরীর বড় কড়াইয়ে টিকটিকির মল পাওয়ার দায়ে টাঙ্গাইলের গৌর ঘোষ দধি ও মিষ্টান্ন ভান্ডারকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, গৌর ঘোষ দধি ও মিষ্টান্ন ভান্ডারকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে, আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবেন। অভিযানে পৌর স্যানেটারি ইন্সপেক্টর ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে গৌর ঘোষ দধি ও মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী স্বপ্নন কুমার ঘোষ জানান, সাধারণত তিনি খুচরা ভাবে দধি বিক্রি করে থাকেন। ফলে তৈরিকৃত দধিতে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ দেওয়া সম্ভব হয় না। তবে এখন থেকে দেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, উদ্ধারকৃত পচে যাওয়া দধিগুলো ফেলে দেওয়ার জন্য রাখা হয়েছিল। এছাড়া যে মিষ্টি তৈরীর বড় কড়াইয়ে টিকটিকির মল হাওয়া গেছে, সেটি বর্তমানে মিষ্টি তৈরীর কাজে ব্যাবহার করা হচ্ছে না। আমরা সবসময় চেষ্টাকরি গ্রাহককে সর্বোচ্চ মানের দধি ও মিষ্টান্ন সরবরাহ করার।

জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা কোনোও সুযোগ নেই-সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ধর্ম উপদেষ্টা

সুনামগঞ্জে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ  ম খালিদ হোসেন বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর কোন সুযোগ নেই। অবাধ,সুষ্ঠ সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সরকারের পাশাপাশি সকল বাহিনী ইতিমধ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে।  আজ শুক্রবার দুপুরে সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলার লাউরেরঘর এলাকায় শ্রী শ্রী অদ্বৈত মহাপ্রভুর মন্দির কমপ্লেক্স ভবণ নির্মাণ কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে এসব কথা বলেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি বলেন,  ইতিমধ্যে সরকার নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে এবং নির্বাচন কমিশন সেই অনুযায়ী কাজ করবে।  সেই সাথে ইতিমধ্যে পুলিশের ট্রেনিং,  সেনাবাহিনীর কতজন লোক থাকবে সেই কাজও শুরু হয়েছে।  আমাদের প্রত্যাশা নির্ধারিত তারিখে এই সরকার সুষ্ঠু,  নিরপেক্ষ ও উৎস উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে জাতীয় নির্বাচন সম্পূর্ণ করতে পারবে সেই প্রস্তুুতি সরকারের আছে। এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আমরা আমাদের পুরোনো ঠিকানায় চলে যাবো। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক ডাঃ মোহাম্মদ ইলিয়াছ মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন,  তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান মানিক ,শ্রী শ্রী অদ্বৈত ধাম পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক অদ্বৈত রায় ও সুরঞ্জিত চৌধুরী টপ্পা প্রমুখ।

কওমী অঙ্গন

আরও পড়ুন
ভুঞাপুরে হেফাজতে ইসলাম উপজেলা শাখার নবগঠিত কমিটির পরিচিতি ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ভুঞাপুর উপজেলা শাখার উদ্যোগে নবগঠিত কমিটির পরিচিতি ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর ২০২৫) সকাল ১০টায় উপজেলার দেওয়ান বাড়ি বাহাতুন্নেসা হাফিজা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। তেলাওয়াত করেন হাফেজ ক্বারী মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ভুঞাপুর উপজেলা শাখার সভাপতি হাফেজ মাওলানা মাহ্ফুজুর রহমান (দা.বা.)। সভায় প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল— সমাজে ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে করণীয়, আহলে হক উলামায়ে কেরামদের ঐক্য সুদৃঢ় করা এবং সংগঠনের সাংগঠনিক কাঠামোকে আরও সুসংগঠিত করার দিকনির্দেশনা। বক্তারা বলেন, বর্তমান সময়ে ইসলামবিরোধী বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন “ইসকন”-এর আত্মঘাতী কর্মকাণ্ড থেকে মুসলিম সমাজকে রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তারা আরও বলেন, আলেম ওলামাদের হক কথা বলার ক্ষেত্রে বা মসজিদের খেদমতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে হেফাজতে ইসলাম ভুঞাপুর উপজেলা শাখা যেন পাশে দাঁড়াতে পারে। সভায় বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুফতি শহিদুল ইসলাম ভূঞাপুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি মুনজুরুল হাসান, সহ-আইনবিষয়ক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা সালিম আহমাদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি মুফতি আল আমিন কাসেমী, সহ-সভাপতি হাফেজ মাওলানা শফিউর রহমান, সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুস সালাম, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মোল্লা হযরত আলী, মুফতি আবু ইউসুফ, সহ-সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুল কাদের, মাওলানা মাহদী হাসান শিবলী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আব্দুল্লাহ আল হুসাইন, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মুফতি সোহাইল হাসান এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি সাব্বির আহমাদ প্রমুখ। সর্বশেষে নবগঠিত কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মুফতি শহীদুল্লাহ্ আন্দিপুরী (দা.বা.)। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন সভাপতি হাফেজ মাওলানা মাহ্ফুজুর রহমান (দা.বা.)।  

অক্টোবর ২৭, ২০২৫ 0

গফরগাঁওয়ে আব্দুর রহমান খান ছাত্র কাফেলার বার্ষিক প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত

জকিগঞ্জে এইচসিআই’র উদ্যোগে আধুনিক মাদরাসার উদ্বোধন ও ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প

খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা জোবায়ের আহমদ চৌধুরী ইন্তিকাল করেছেন

হাটহাজারীর বাবা হুজুর : বাবা নামের উৎপত্তি ও তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবনী

মাওলানা মুমতাযুল করীম [বাবা হুযুর] আমার জানা মতে ১৯৪২ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ থানার ডুলিপাড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সাদাসিধে আল্লাহওয়ালা এবং দরবেশ সিফাতের মানুষ ছিলেন। দ্বীনের প্রতি তার দরদ অপরিসীম। বাংলাদেশের প্রায় সকল মাদরাসার বার্ষিক মাহফিলে এবং বড় বড় ইসলামী সম্মেলনে তিনি আলোচনার জন্য আমন্ত্রিত হতেন। ধর্মপ্রাণ মানুষ তার সারগর্ভ আলোচনা শোনার জন্য আগ্রহভরে অপেক্ষা করতেন। তাঁর আলোচনা ছিল সংক্ষিপ্ত এবং ব্যাপক অর্থবোধক। মাওলানা মুমতাযুল করীম (বাবা হুযুর) নিজ এলাকার বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান 'বটোগ্রাম হামীদিয়া মাদরাসা'য় শিক্ষা-জীবন শুরু করেন অতঃপর ফেনী শর্শদী মাদরাসায় কিছুদিন পড়াশোনা করে দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, উম্মুল মাদারিস দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসায় ভর্তি হন। হাটহাজারী মাদরাসায় কয়েক বছর লেখাপড়া করার পর জামি'আ ইসলামিয়া পটিয়া মাদরাসা থেকে কৃতিত্বের সাথে দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) সমাপ্ত করেন। দাওরায়ে হাদীস সমাপ্ত করে উচ্চ শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে ১৯৬৩ ঈ. সালে পাকিস্তান গমন করেন। পাকিস্তানের বিখ্যাত মাদরাসা 'জামিয়া আশরাফিয়া লাহোর' থেকে তাফসীর এবং আদব (আরবী সাহিত্য) বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী গ্রহণ করেন। দেশে ফিরে এসে সর্বপ্রথম ময়মনসিংহের 'কাতলাসেন কাদেরীয়া কামিল মাদরাসা'য় মুহাদ্দিস হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তবে বেশিদিন সেখানে ছিলেন না। একই বছর ১৯৬৫ ঈ. সনে বরিশালের ঐতিহ্যবাহী চরমোনাই মাদরাসায় মুহাদ্দিস হিসেবে যোগ দেন এবং সেখানে মুসলিম শরীফের দারস প্রদান করেন। পরবর্তীতে ঢাকা আশরাফুল উলূম বড়কাটারা মাদরাসায় সাত বছর মুহাদ্দিস হিসেবে খেদমত করে চট্টগ্রামের আল-জামি'আতুল ইসলামীয়া পটিয়া মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পটিয়া মাদরাসায় তিনি টানা সাত বছর কৃতিত্বের সাথে পাঠদান করেন। ১৯৮৪ ঈ. সালে দেশের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীতে শিক্ষক হিসেবে তিনি যোগদান করেন। হাটহাজারী মাদরাসায় অত্যন্ত সুনাম ও সুখ্যাতির সঙ্গে শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করেন। হাটহাজারী মাদরাসায় অধ্যাপনাকালে শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের মাঝে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। বাবা হুযুর নামে পরিচিত হওয়া ও বাবা হুযুর নামের উৎপত্তি: তিনি বাবা হুযুর নামে পরিচিত। বাবা নামে তাঁকে সবাই ডাকে। তবে এই নামের উৎপত্তি কোথায়, কীভাবে তিনি 'বাবা হুযুর' নামে প্রসিদ্ধ হলেন—অনেকেরই অজানা। ১৯৮৫ ঈ. সন। হুযুরের নিকট আমাদের দারছে নিযামীর আরবী সাহিত্য ও শে'র এর কিতাব—'নাফহাতুল আরব' ও 'ক্বাসীদাহ বুরদাহ' পড়ার সুযোগ হয়েছিল। মাওলানা মাহমুদ বাঁশখালী (যিনি সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছেন), মাওলানা আতাউল্লাহ (বর্তমান মুহতামিম: হেমায়েতুল ইসলাম কৈগ্রাম, পটিয়া, চট্টগ্রাম), মাওলানা মুহাম্মদ গড়দুয়ারী (বর্তমান শিক্ষক: দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসা), মাওলানা মুহাম্মদ আলী চারিয়া এবং আমি লেখক এক জামাতের ছাত্র। বাবা হুযুরের সাথে আমাদের সম্পর্ক ছিল গভীর। ছাত্র ও শিক্ষকের সম্পর্ক। বাপ-বেটার সম্পর্ক। আমাদের 'ক্বাসীদাহ বুরদাহ' দারছ দেয়ার সময় তিনি এক ছাত্রকে বেত্রাঘাত করলে এক পর্যায় ঐ ছাত্র 'ও বাবা, ও বাবা' করে চিৎকার করতে থাকে। তখন বাবা হুযুর বেত্রাঘাত না করে হাসতে থাকেন এবং পকেট থেকে কিছু টাকা বের করে ঐ ছাত্রকে হাদিয়া দেন। সেদিন থেকে যখন তিনি কোনো ছাত্রকে বেত্রাঘাত করতেন ছাত্ররা 'বাবা' বলে ডাক দিলে তিনি আর মারতেন না। এভাবে শুরু হয়ে গেল বাবা ডাকা-ডাকি। বাবা হুযুর নামের প্রসিদ্ধ হওয়ার আরো কাহিনী আছে— হাটহাজারী মাদরাসার বড় মসজিদে ফজরের নামাযের পর শাইখুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফী রাহ. জামি'আর ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময় জরুরী কথাবার্তা বলতেন এবং গুরুত্বপূর্ণ নাসিহা পেশ করতেন। অনেকসময় নাসিহা শুরু করার পূর্বে চট্টগ্রামের ভাষায় বলতেন—'ওয়া! মৌলভী মুমতায আছোনি?' তিনি জানতেন আর কেউ না থাকলেও বাবা হুযুর প্রথম কাতারে আছেন। উত্তরে বাবা হুযুর বলতেন—'লাব্বাইক, আছি হুযুর'। প্রায় সময় এরকম দৃশ্য আমরা দেখতে পেতাম। একদিনের ঘটনা—ফজরের নামাযের পর অন্যান্য দিনের ন্যায় শাইখুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফী রাহ. বলে উঠলেন— 'বাবা হুযুর আছোনি?' উস্তাযের মুখে বাবা ডাকা শুনে পকেট থেকে ৫০০ টাকার দুটি নোট বের করে উস্তাদের হাতে তুলে দিলেন বাবা হুযুর। তখন শাইখুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফী রাহ. মজা করে পুনরায় বাবা হুযুর বলে ডাক দিলে বাবা হুযুর আরও দুটি ৫০০ টাকার নোট হুযুরের হাতে দিয়ে বলতে লাগলেন—'আজকে আর বাবা ডাকবেন না, পকেটে আর টাকা নেই'। মসজিদে উপস্থিত ছাত্র ও মুসল্লিদের মধ্যে ছাত্র ওস্তাদের এই দৃশ্য দেখে আনন্দের বন্যা বয়ে গেল। মূলত ওদিন থেকেই বাবা হুযুর নামটি সব ছাত্রদের মুখে মুখে হয়ে গেল। বাবা ডেকে আমরা তাঁর কাছ থেকে কত টাকা ছিনিয়ে নিয়েছি তার কোনো হিসেব নেই। এ ঘটনার পর থেকে তিনি বেত্রাঘাত ছাড়াও বাবা ডাকলে খুশী হতেন এবং কিছু টাকা হাদিয়া দিতেন। যেহেতু হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্র দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন তাই তিনি দেশব্যাপী ‘বাবা হুযুর’ নামে পরিচিতি লাভ করেন। একজন শিক্ষকের জন্য এর চেয়ে পরম পাওয়া আর কী আছে! ১৯৮৪ ঈ. সাল থেকে টানা ৩৫ বছর (২০১৯ ঈ.পর্যন্ত) তিনি হাটহাজারী মাদরাসায় শিক্ষকতা করেছেন। হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষক থাকাকালীন ঢাকা, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন মাদরাসায় খন্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন এবং 'বুখারী শরীফ' সহ বিভিন্ন হাদীসের কিতাবের দারছ প্রদান করেছেন। জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে তিনি দারছ প্রদান থেকে অনেকটা অক্ষম হয়ে পড়েন এবং এক পর্যায়ে হাটহাজারী মাদরাসা ছেড়ে ঢাকা নিজ বাসভবনে অবস্থান করতে থাকেন। কিন্তু হাটহাজারী মাদরাসায় শিক্ষকদের তালিকায় তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং তাঁর নির্ধারিত বেতন-ভাতা যথারীতি অব্যাহত ছিল। চরমোনাই মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের কিছুদিনের মধ্যেই চরমোনাই পীর মরহুম মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাক রাহ. মাওলানা মুমতাজুল কারিমকে অত্যাধিক স্নেহ ও ভালোবাসার পাত্রে পরিণত করে মেয়ে সাইয়্যিদা হূরুন্নিছা বেগমকে তার সথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেন। দীর্ঘ ৩০ বছর সংসার জীবন শেষে বাবা হুযুরের প্রিয়তমা স্ত্রী (মাওলানা মাহমুদুল হাসান মুমতাযীর মুহতারামা মা) ১৯৯৫ ঈ.তে ইন্তিকাল করেন। অতপর ১৯৯৬ ঈ.তে বাবা হুযুর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সদা সুন্নতের ওপর অটল, বিশিষ্ট বুযুর্গের আমল-আখলাকের কথা সর্বজনবিদিত। অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী অবস্থায়ও কেউ তাকে দেখতে গেলে হাদিয়া দেওয়ার কথা ভুলতেন না। গত ২৯.১১.'২১ঈ. তারিখে আমি অধম তাঁর সাথে সাক্ষাত ও দু'আ নেয়ার জন্য তার ঢাকাস্ত বাসায় গেলে মুমূর্ষু অবস্থায়ও তিনি আমার হাতের মুঠোয় পাঁচশত টাকার কচকচে একটি নোট গুঁজে দেন। তার দেয়া হাদিয়ার টাকা আজও আমি আলমিরাতে সংরক্ষণ করে রেখেছি। তিনি সুন্নতের খেলাফ কোনো কিছু দেখলে খুব রেগে যেতেন। সুন্নাহর উপর আমল করা তার স্বভাবে পরিণত হয়েছিল। দুনিয়ার বুকে আমরা অনেক দরবেশ-বুযুর্গ, পীর-মাশাইখ ও জ্ঞানী-গুণীর দেখা পাই। কিন্তু কথা ও কাজে মিল রেখে জীবন পরিচালনা করেছেন এমন ব্যক্তি পাওয়া সত্যিই দূর্লভ। মাওলানা মুমতাযুল করীম বাবা হুযুর ছিলেন সম্পুর্ণ এর বিপরীত। ইসলামের প্রচার-প্রসার, কুরআনের তাফসীর, ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদসহ নানা দ্বীনী কাজে তিনি দেশের আনাচে-কানাচে চষে বেড়িয়েছেন। অংশ নিয়েছেন সভা-সমিতি, ওয়ায মাহফিল, জনসভা ও ইসলামী সম্মেলনে। একাধিক দেশও ভ্রমণ করেছেন। তন্মধ্যে তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, আমেরিকা, লন্ডন, থাইল্যান্ড, চীন, হংকং, কুয়েত, কাতার, বাহারাইন, সৌদি আরব, পাকিস্তান, ভারত ও মায়ানমার অন্যতম। শেষ জীবনে শারিরীকভাবে অসুস্থ হলেও উম্মাহর চিন্তায় সদা ব্যাকুল ছিলেন তিনি। উম্মাহর কল্যাণে তিনি অনেক কাজ করেছেন। শুধু হাদীসের খিদমাত ও ওয়ায মাহফিল নয়, লেখালেখির ময়দানেও মাওলানা মুমতাযুল কারীম বাবা হুযুর রাহ.র অবদান রয়েছে। সুলুক ও তাসাউ্উফের মেহনতও তিনি করেছেন। তিনি সর্বপ্রথম হাকীমুল ইসলাম মাওলানা কারী তায়্যিব রাহ.র নিকট বাই'আত গ্ৰহণ করেন। পরবর্তীতে পীরে কামেল মাওলানা মুহাম্মাদ কামরুজ্জামান এলাহাবাদী (বখশিবাজারী) তাকে চিঠির মাধ্যমে চার তরিকায় খেলাফত প্রদান এবং বায়াত করার অনুমতি দেন। এছাড়া দারুল মা‘আরিফ চট্টগ্রামের তদানীন্তন শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা ইহসানুল হক রাহ. তাকে লিখিতভাবে খেলাফত প্রদান করেন এবং খানকায়ে এহসানিয়া প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেন। ২০১৭ সালে মাহবুবুল উলামা হযরত মাওলানা পীর জুলফিকার আহমদ নকশবন্দী মুজাদ্দেদীও তাকে খেলাফত প্রদান করেন। তার রচিত গ্রন্থাবলীর অন্যতম হলো— • বোখারি শরিফের উর্দূ ব্যাখ্যাগ্রন্থ হাবিবুল বারী শরহিল বোখারি, • আরবী কাওয়াইদে ফিকহিল হানাফি • তারিখুত তাফসির, • কোরআন-হাদিসের অমূল্য রত্ন, • পরকালে মুক্তি কিসে? (অনুবাদ), • উলুমুল কুরআন, • এসো কোরআনের অর্থ শিখি, • আকিদায়ে খতমে নবুওয়ত, • রায়বেন্ডের দশদিন (অনুবাদ) ও • আল্লাহকে পাওয়ার রাস্তা। এছাড়া বিভিন্ন মাসিক পত্রিকা, স্মরণিকা ও স্মারকগ্রন্থে তার অনেক লেখা প্রকাশ হয়েছে। মাওলানা মুমতাযুল কারীম বাবা হুযুরের উস্তাযদের অন্যতম হলেন— শায়খুত তাফসীর ওয়াল ফুনুন আল্লামা ইদরীস কান্ধলভী রাহি., শাইখুল হাদীস আল্লামা মুহাম্মদ সরফরায খান সফদর রাহ., উস্তাযুল-কুল শাইখুল মাশায়েখ আল্লামা রাসূল খান রাহ. ও শাইখুল ফালসাফা মাওলানা গোলাম গাওছ হাজারভী রাহ., বাংলাদেশের মীর সাহেব হুযুরখ্যাত শাইখুল উলূম ওয়াল ফুনূন, রঈসুল মুহাদ্দিসিন আল্লামা আমীর হুসাইন রাহ., শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী রাহ., আল্লামা আনওয়ারুল আযীম রাহ., শাইখুল হাদীস মাওলানা নূরুল ইসলাম শর্শদীর হুযুর রাহ.। বাবা হুযুর বাংলদেশের সদর সাহেব হুযুরখ্যাত মুজাহিদে আযম আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী রাহ. এর সান্নিধ্যও পেয়েছেন। ১৯৬৭ ঈ.র দিকে তিনি গওহরডাঙ্গা মাদরাসায় গেলে সদর সাহেব হুযুর তাকে সাথে করে নিয়ে পুরো মাদরাসা ঘুরিয়ে দেখান এবং ছাত্রদের দরস দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। বাংলাদেশের বড় বড় আলেমদের সান্নিধ্য তিনি পেয়েছেন। তিনি যাদের সান্নিধ্য পেয়েছেন তাদের অন্যতম হলেন— মুফতীয়ে আযম মুফতী ফয়যুল্লাহ রাহ. ও পটিয়া মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মুফতী আযীযুল হক রাহ.। তিনি সারাজীবন দ্বীনের আলো, হাদীসের বাণী, সুন্নতের দাওয়াত ও কুরআনের আওয়াজকে বুলন্দ করার মিশন নিয়ে কাজ করেছেন। স্বপ্ন দেখেছেন নিজ হাতে গড়া ছাত্রদের নিয়ে, তারা যেন প্রকৃত আলিম ও দ্বীনের দা'ঈ হয়ে ইসলামের প্রচার-প্রসারে আত্মনিয়োগ করতে পারেন। হাটহাজারী মাদরাসায় আমার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ হওয়ার ব্যপারে যাদের পরামর্শ ও অবদান রয়েছে মাওলানা মুমতাযুল কারীম বাবা হুযুরও তাদের একজন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। সাদাসিধে যিন্দেগি ও সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। সত্য-সুন্দরের পথে, আল্লাহ নির্দেশিত ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লামের প্রদর্শিত জীবনের পথে জীবনের লক্ষ্য স্থির করেছিলেন।পার্থিব কোনো লোভ-লালসা তাকে কখনো বিন্দুমাত্র স্পর্শ করতে পারেনি, তার স্বচ্ছতা ও সততার বিষয়টি শত্রু-মিত্র, পক্ষ-বিপক্ষ নির্বিশেষে সর্বমহলে প্রশংসিত। সততার এই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সবার জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। রাব্বে কাইনাতের দরবারে আমাদের বিনীত প্রার্থনা—মহান আল্লাহ তা'আলা তার জীবনের খাত্বা-কসূর ক্ষমা করে তাকে যেন জান্নাতের আ'লা মাকাম দান করেন! আমীন ! বাবা হুযুরের সাথে আমার সম্পর্ক ছিল সুগভীর। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা, বহির্বিশ্বের সিঙ্গাপুর থাইল্যান্ড সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রে বাবা হুযুরের সফরসঙ্গী হওয়ার সুযোগ হয়েছে আমার। তার সাথে রয়েছে অনেক স্মৃতি; কিছু স্মৃতি মজার, কিছু স্মৃতি শিক্ষার। এসব লিখতে গেলে একটি ভলিয়ম হয়ে যাবে। তবে এতটুকু আজকের এই সংক্ষিপ্ত লেখায় বলা যায়— সফরে-হযরে দেশে-বিদেশে বাবা হুযুরের কোনোদিন তাহাজ্জুদ ক্বাযা হয়েছে বলে অন্তত আমার জানা নেই। বাসে-বিমানে-রেলে পাঁচ ওয়াক্ত নামায প্রথম ওয়াক্তে তিনি আদায় করতে ভুলে যাননি কখনো। আজ ২৮ মার্চ ২০২৩ ঈ. হাটহাজারী মাদরাসার মাঠে হাজার হাজার মুসল্লিদের উপস্থিতিতে এবং মারহূমের সাহেবযাদা মাওলানা মাহমুদুল হাসান মুমতাযীর ইমামতিতে তাঁর নামাযে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা শেষে মারহূমের দু' সহকর্মী হযরত মাওলানা শামছুল আলম (মুহাদ্দিস: হাটহাজারী মাদরাসা) ও মাওলানা হারূন যফর রাহ. (মুহাদ্দিস: হাটহাজারী মাদরাসা) এর পাশে বাবা হুযুরকে সমাহিত করা হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল বিরাশি বছর। — আশরাফ আলী নিজামপুরী (বারাকাল্লাহু ফি হায়াতীহি)

মার্চ ৩০, ২০২৩ 0

ইসকন নিষিদ্ধের দাবি ও সাইফুল ইসলাম হত্যার প্রতিবাদে হেফাজতের বিক্ষোভ শুক্রবার

হেফাজতের দাবি: ৫ মে ২০১৩ শাপলা চত্বরে ৯৩ জন নিহত, চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করছে সংগঠনটি

ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ঝাওয়াইল ইউনিয়নে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক

0 মন্তব্য