আটক করার দীর্ঘ ৪ মাসের ব্যবধানে নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আগ্রহী প্রায় ৭০ জন দরদাতাদের কাছ থেকে জামানত হিসেবে ১০ লাখ টাকার পে-অর্ডার গ্রহন করার পরও জব্দকৃত বিভিন্ন আকৃতি ও রঙ্গের ভারতীয় ৯০টি ডেকা ষাড় গরুর নিলাম সংক্রান্ত কার্যক্রম স্থগিত করেছেন সনামগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার পর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতের এজলাস কক্ষে সুনামগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের নিলাম সংক্রান্ত কমিটির আহবায়ক ও বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাং হেলাল উদ্দিন,জনাকীর্ণ আদালতে এই নিলাম কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেন।
বিজ্ঞ আদালতের দুইজন বিচারক একত্রে এজলাসে বসে ঘোষণা করেছেন, সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার মামলা নং ০২ (জিআর ১২৬/২০২৫) তাং ৪/৫/২০২৫ইং এর মাধ্যমে জিম্মাদারদের কাছে যে ৯০টি গরু জিম্মায় দেয়া হয়েছিল তারা আজকে আদালতে এতদিন গরুগুলোর ভরন পোষন বাবত ১৯ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে আদালতের কাছে দাবী করেছেন। অন্যদিকে আজকে আদালতের সামনে যে ৯০টি গরু উপস্থাপন করা হয়েছে সেগুলো বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করে আমরা দেখেছি পূর্বের জব্দকৃত গরুগুলোর সাথে আকারে প্রকারে আজকের আনীত গরুগুলোর কোন মিল নেই। এছাড়া সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজ ও তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে আদালতের নিলাম কমিটির কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে, ৯০টি গরু উপস্থাপন করতে গিয়ে জাল জালিয়াতির আশ্রয় গ্রহন করা হয়েছে। এসব কারণে বিজিবিসহ সংশ্লিষ্ট সকল এজেন্সীর মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে আমরা নিলাম কার্যক্রম আপাতত স্থগিত ঘোষণা করলাম।
জানা যায়,সুনামগঞ্জের সাংবাদিকদের কাছ থেকে সংবাদ প্রাপ্ত হয়ে গত ৩০ এপ্রিল ২৮ বর্ডারগার্ড ব্যাটালিয়ান(বিজিবি)”র সদস্যরা দোয়ারাবাজার থেকে একটি স্ট্রীলবডি ইজ্ঞিন চালিত নৌকায় করে সুরমা নদী দিয়ে পাচারকালে ইঞ্জিননৌকাসহ যে ৯০টি ভারতীয় গরু আটক করেছিল সেই গরুগুলো তৎকালীন চোরাচালান বিরোধী টাস্কফোর্সের সভাপতি ও জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ৫জন চোরাকারবারীর কাছে জিম্মা দেন সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) এর আওতাভূক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ঐ জিম্মাদানের ঘটনাটিকে জিম্মা নাটক বলে এই প্রক্রিয়াকে বেআইনী ঘোষণা করে সিলেটের বিভাগীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কার্যক্রমে লিখিত বক্তব্য দিয়ে সম্পৃক্ত হন সুনামগঞ্জের সচেতন ৮/১০ জন সাংবাদিক। এদিকে ২৬ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৪ টায় চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর কার্যালয়স্থিত নিলাম কমিটির আহবায়কের এজলাস কক্ষে প্রকাশ্য নিলামে বিক্রয় করা হবে ৯০টি গরু। আগ্রহী ক্রেতাগনকে যথাসময়ে উপস্থিত থেকে ৯০টি ডেকা ষাড় গরু ক্রয়ের জন্য ১০ লক্ষ টাকা জামানত হিসেবে সংশ্লিষ্ট আদালতের নেজারত বিভাগের রুপালী ব্যাংক শাখার অনুকূলে ১৯৩৩০২৪০০০০২৩ নং হিসেবে পে-অর্ডারের মাধ্যমে টাকা জমা দিতে বলা হয়। গত ১০/০৮/২০২৫ইং তারিখে ৩৮২ নং স্মারকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ও সিজেএম কোর্টের নিলাম সংক্রান্ত কমিটির আহবায়ক মুহাং হেলাল উদ্দিন উক্ত নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রদানের মাধ্যমে বিজ্ঞ আদালতের আদেশ জারী করলে একাধিক আগ্রহীরা নিলামে অংশগ্রহন করেন। কিন্ত কাস্টমস ও বিজিবি কর্তৃপক্ষের মতে এই নিলাম এখতিয়ার বহির্ভূত। কাস্টমসকে উপেক্ষা করে আদালত একতরফাভাবে নিলাম করতে পারেনা বলে যে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল শেষ পর্যন্ত সেটিই বাস্তবায়িত হলো।
এর আগে সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সদস্য ও দৈনিক খবরপত্র প্রতিনিধি হোসাইন মাহমুদ শাহীনসহ ৮জন সাংবাদিক বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) পর্যন্ত তদন্ত কমিটির আহবায়ক কাস্টমস,এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেট এর কমিশনার রেজভী আহাম্মেদ এবং একই বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলা বিভাগীয় কর্মকর্তা ও তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব সহকারী কমিশনার গৌরব মহাজনের কাছে সুনামগঞ্জে ৯০টি ভারতীয় গরু অদৃশ্য হওয়ার ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেজাউল করিমকে দায়ী করে তদন্ত কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। গত ১২মে কাস্টমস,এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেট এর ০৮.০১.৬০০০.০১৭.৩৪.০০৩.০৭ (অংশ-১)/২৪৬৮ নং স্মারকাদেশ মোতাবেক জনৈক আব্দুল আলী নামের এক ব্যক্তির দায়েরকৃত অভিযোগের ভিত্তিতে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে ৪ সদস্য বিশিষ্ট উক্ত তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
দায়েরকৃত অভিযোগে সাংবাদিকরা বলেন,গত ৩০ এপ্রিল আমরা সুনামগঞ্জ শহরে কর্মরত প্রায় ২০ জন সাংবাদিক ঘটনার সময় জেলার আব্দুজ জহুর সেতুতে অবস্থান করে,নদীপথে ৯০টি ভারতীয় চোরাই গরু পাচার করা হইতেছে দেখে স্বউদ্যোগী হয়ে বিজিবি সুনামগঞ্জকে একের পর এক মোবাইল কল করত: সংবাদ দেই। আমাদের মোবাইল ফোনের সংবাদে বিজিবি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের অচিন্তপুর গ্রামের সামনে সুরমা নদীতে নৌকাসহ ৯০টি গরু আটক করে ব্যাটালিয়নের হেডকোয়ার্টারে আটককৃত নৌকাসহ ৯০টি গরু নিয়ে যায়। আটককৃত গরুগুলোর ব্যাপারে সদর উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ অমিত সাহা,এগুলো ভারতের মেঘালয় এলাকার গরু বলে লিখিত মতামত ব্যক্ত করেন।
এরপর আমরা সাংবাদিকরা সুনামগঞ্জ বিজিবির মল্লিকপুরস্থ হেডকোয়ার্টারে সরজমিনে গিয়ে আটককৃত গরুগুলোর ভিডিও ধারন করি। এসময় সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত কাস্টমস কর্মকর্তা মোঃ জালাল উদ্দিন ,স্টমস আইন ২০২৩ ও বিধি অনুযায়ী গরুগুলো নিলাম দেওয়ার জন্য বলার পরও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুনামগঞ্জ (এডিএম) মোহাম্মদ রেজাউল করিমের দোহাই দিয়ে ৫ জন ব্যবসায়ী বিজিবির মল্লিকপুরস্থ হেডকোয়ার্টারে অনধিকার প্রবেশ করে সাংবাদিকদের সাথে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়। পরবর্তীতে আমরা জানতে পারি অনধিকার প্রবেশকারী ঐ ৫জন লোক ভারতীয় গরুর চোরাকারবারী। এডিএম মোহাম্মদ রেজাউল করিম,ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রচলিত কাস্টমস আইনকে উপেক্ষা করে ঐ ৫ জন লোকের কাছে একে অপরের যোগসাজশে তার পছন্দের ব্যক্তি হিসেবে আটককৃত ভারতীয় গরুগুলো নির্বাহী ম্যাজিট্টেট মেহেদী হাসান হৃদয় কে প্রেরণ করে উপস্থিত সকল সংস্থার উপর চাপ সৃষ্টি করে গরুগুলো তাদের জিম্মায় দিতে বিজিবিকে বাধ্য করেছেন। ঐদিন তিনি জেলা সদরে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসকের ও চোরাচালান বিরোধী টাস্কফোর্সের সভাপতিরও দায়িত্বে ছিলেন। জিম্মা গ্রহনকারীরা ঐ গরুগুলো এডিএম রেজাউল করিমের আশ্রয় প্রশ্রয়ে ও পরোক্ষ সহযোগীতায় কালোবাজারে বিক্রয় করেছে মর্মে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় তদন্তাধীন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আল আমিন সরজমিনে গিয়ে ৯০টি ভারতীয় গরু জিম্মাদারদের কাছে না পেয়ে গত ১০ জুন বিজ্ঞ আদালতকে লিখিতভাবে অবগত করেন। পরবর্তীতে ভারতীয় গরু পাচারের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে এডিএম মোহাম্মদ রেজাউল করিম কথিত ৫ জিম্মাদারকে যেকোন মূল্যে ৯০টি গরু তাদের হেফাজতে পুনরায় সংগ্রহের নির্দেশ দিলে উক্ত জিম্মাদাররা দেশী বিদেশী আরো ৯০টি গরু সংগ্রহ করে। কিন্তু পরবর্তীতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা,বিজিবি,কাস্টমস এর কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা জিম্মাদারদের জিম্মায় নেয়া পূর্বের গরুর মধ্যে মাত্র ১৪টি ভারতীয় গরুর কোনরকম মিল পেলেও বাকী গরুগুলো পূর্বের আটককৃত ও জিম্মায় দেয়া গরুর সাথে মিলেনা বলে জানিয়েছেন এবং মতামত ব্যক্ত করেছেন। সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন,বিজিবির উপস্থাপন মতে ৯০টি গরুর মধ্যে পূর্বের গরুর সাথে মাত্র ১৪টি গরুর মিল পাওয়া গেছে মর্মে গত ২৮ জুলাই বিজ্ঞ আদালতে আমি একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছি।
ভারতীয় গরু পাচারে সহায়তার অভিযোগটি ধামাচাপা দিতে এবং বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে জাল জালিয়াতির আশ্রয় গ্রহন করা হচ্ছে বলেও দুদকের কর্মকর্তারা অনুসন্ধানে জানতে পেরেছেন। গত ২৯ জুলাই কাস্টমস বরাবরে সাংবাদিকদের নাম ঠিকানা উল্লেখসহ সাংবাদিক হোসাইন মাহমুদ শাহীন একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সদাশয় সরকারের ৭০ লক্ষ টাকা রাজস্বের ক্ষতিসাধন এবং কাস্টমস আইন অমান্য করে জিম্মদার নাটকের মাধ্যমে ভারতীয় গরু পাচারে সহায়তার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে এডিএম রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন অভিযোগকারী সাংবাদিকবৃন্দ। জানা যায়,এডিএম রেজাউল করিম ২০২৩ সালের ৮ ফেব্রæয়ারি সুনামগঞ্জে এডিসি হিসেবে যোগদান করেন। এরপর থেকে আওয়ামীলীগের মন্ত্রী,এমপি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে তার ব্যক্তিগত দহরম মহরম গড়ে উঠে। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালকের দায়িত্বে থেকে হাঠবাজারের গরু বিক্রেতাদের সাথে গড়ে উঠে তার অন্যরকম সম্পর্ক।
সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবির অধিনায়ক লে.কর্নেল জাকারিয়া কাদির বলেন, ৯০টি গরু টাস্কফোর্স কমান্ডার জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ৫ জনকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। পরে পুলিশ সরেজমিন তদন্ত করে জানতে পেরেছে আমাদের আটককৃত গরুগুলো জিম্মাদারদের কাছে নেই।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ওই ঘটনার টাস্কফোর্স কমান্ডার মেহেদি হাসান হৃদয় ইতিপূর্বে সাংবাদিকদের বলেন,আমি বিজিবিকে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দিয়ে গরুগুলো ৫ জনের জিম্মায় দিয়েছিলাম। এগুলো রাখার এখতিয়ার আমাদের নেই। এ বিষয়ে আদালতই সিদ্ধান্ত নিবেন। সুনামগঞ্জ জেলা সদরে শত শত গরু বিক্রেতা ও খামারী থাকার পরও দোয়ারাবাজারের সীমান্ত হাটের ব্যবসায়ীদের কাছে কার নির্দেশে জিম্মায় দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন,যে ম্যাজিস্ট্রেট গরুগুলো জিম্মায় দিয়েছেন এবং যে কর্মচারী কথিত জিম্মানামায় স্বাক্ষর করেছেন তাদের উভয়কেই বিজিবির হেডকোয়ার্টারে প্রেরণ করেছেন এডিএম রেজাউল করিম। সুতরাং জিম্মা নাটকের মাধ্যমে ভারতীয় গরু আড়াল করার ঘটনার দায় তিনি কোনভাবেই এড়িয়ে যেতে পারেননা।
কিন্ত অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেজাউল করিম বরাবরই বলে এসেছেন,এটা কোর্টের বিষয় কোর্ট দেখবে। তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।
কাস্টমস,এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়ের সুনামগঞ্জ জেলা কর্মকর্তা ও তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব সহকারী কমিশনার গৌরব মহাজন ও বড়ছড়া কাস্টমস এর গোডাউন কর্মকর্তা মোঃ জালাল উদ্দিন বলেন,আমরা বারবার বলে আসছি ভারতীয় গরু নিলামের এখতিয়ার শুধুমাত্র কাস্টমস আইনে কাস্টমস কর্তৃপক্ষসহ চোরাচালান বিরোধী টাস্কফোর্সের হাতেই ন্যস্ত রয়েছে। আমরা বিধি মোতাবেক জেলা প্রশাসন,বিজিবি,ডিজিএফআই ও এনএসআই প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে প্রকাশ্য দিবালোকে নিলাম করার আইনগত অধিকার রাখি। ৩০ এপ্রিলের জব্দকৃত গরুগুলো ঐসময়ই নিলাম করার কথা। কিন্তু জেলা প্রশাসন কাস্টমস আইন ও বিধিবিধান অনুসরণ না করায় ৪ মাস পরে নিলাম দেওয়ার কথা উঠেছে।
তাছাড়া পূর্বের ৯০টি ভারতীয় গরুর মধ্যে বর্তমানে আছে ১৪টি। বাকি ৭৬টি ভেজাল গরু সংগ্রহ করে জাল জালিয়াতির আশ্রয় যারা গ্রহন করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করার দায়িত্ব সুনামগঞ্জবাসীকে নিতে হবে বলে আমরা মনে করি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে পূর্বের জব্দকৃত ৯০ টি ভারতীয় গরুর মধ্যে যেখানে পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট মতে ৭৬টি গরু এখনও বাস্তবে নেই সেই ৭৬টি গরুর দায়িত্ব কে নেবে ? এবং ৩০ এপ্রিলের পর ১লা মে সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবির হেডকোয়ার্টারে আমাদের নির্ধারিত ৭০ লক্ষ টাকা নিলামের সরকারী রাজস্ব মূল্য কে দেবে ? এরজন্য যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে আদৌ কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে কি ? এছাড়া বিজিবি হেডকোয়ার্টারে হাতের নাগালের মধ্যে পেয়েও যেসব চোরাকারবারীদের আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি এমনকি আসামী করা হয়নি মামলার এজাহারে সেই ৫ জিম্মাদারের কবল থেকে ৭৬টি গরু উদ্ধারের কোনরকম প্রচেষ্টা কি আদৌ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নেবে সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সচেতন নাগরিকদের মধ্যে।
মঙ্গলবার বিজ্ঞ আদালতের সামনে উপস্থিত আইনজীবী,সাংবাদিক,আইনজীবী সহকারী,নিলামে অংশ নেয়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ব্যবসায়ীরা একবাক্যে বলেন,আজ আমরা যে গরুগুলো দেখলাম তার মধ্যে একটি গরু ও পূর্বের জব্দকৃত মোটাতাজা ভারতীয় গরু নয়। এগুলোর সবকটিই হচ্ছে স্থানীয় জাতের গরু। এর মধ্যে ৭৬টিই হচ্ছে ছোট বকনা বাছুর। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত কোনদিকে মোড় নেয় সেদিকে দৃষ্টি এখন সকলের।
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”
বাংলাদেশের বৃহৎ এনজিও সংস্থা "আশা"এর উদ্যোগে হয়ে গেল ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন যেখানে ফ্রিতে চিকিৎসা দেওয়া হয় এলাকার বিভিন্ন পেশাজীবী এবং কর্মজীবী মানুষের মধ্যে। ২৪ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার সোনামুই গ্রামে সকাল থেকে এই ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন করা হয় আশায় এনজিও হেমনগর শাখার উদ্যোগে এটি বাস্তবায়িত করা হয়। উক্ত ক্যাম্পেইনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মী এবং মেডিকেল অফিসারসহ অন্যান্য সেবিকারা। আশা এনজিও কর্তৃক ক্যাম্পেইনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন "আশা" হেমনগর ব্রাঞ্চের পক্ষথেকে আশা এনজিওর এই ক্যাম্পেইনে গ্রামের সকল পেশাজীবীর মানুষেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ক্যাম্পেইনটিতে অংশগ্রহণ করেন এবং তারই মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সঠিক ভাবে নিরূপণ করতে সহযোগিতা করেন। আশা এনজিওর মাধ্যমে ক্যাম্পেইন করে মানুষের জন্য সময় উপযোগী এবং প্রয়োজনীয় একটি বিষয় হয়ে দাঁড়াবে যেটি গ্রামের মানুষের মধ্যে সচেতনতা এবং স্বাস্থ্য সঠিকভাবে পর্যালোচনা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই উদ্যোগে এলাকাবাসী অত্যন্ত প্রাণবন্ত ভাবে উৎফুল্ল প্রকাশ করেছে। উক্ত ক্যাম্পেইনে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিকবৃন্দ এবং সাধারণ মানুষ। এবং তাদের ক্যাম্পেইন ডাক্তার সঠিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করেছে। আশা এনজিও আগামী দিনগুলোর জন্য এইরকম ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি ধাপ হিসাবে গণ্য হবে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবকদল সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লা পাড়া ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকালে সদর উপজেলার স্থানীয় বেতগঞ্জ বাজাএই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আবুল কাশেম দুলু সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এডভোকেট দীপংঙ্কর বনিক সুজিতের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক মনাজ্জির হোসেন। সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক সুহেল মিয়া, শাহজাহান মিয়া, এডভোকেট আব্দুল আহাদ জুয়েল, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মুজাব্বির হোসেন অপু, ইমরান হোসেন শ্যামল, বিপ্লব খান, মো:শামিম আহমদ, সেচ্ছাসেবক দলের দপ্তর সম্পাদক সাদিকুর রহমান চৌধুরী, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আতাউর চৌধুরী শাহীন প্রমুখ। এ ছাড়া ও উপস্থিত ছিলেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার আলম, লিয়াকত আলী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আতহাব চৌধুরী হাসান, শাখাওয়াত হোসেন পলাশ, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইমন আহমেদ, ফয়সাল আহমেদ, মিছবাহ হোসেন, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মহিম উদ্দিন, জেলা যুবদলের সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মঈনুদ্দিন আহমেদ রিপন,সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আব্দুল কাইয়ুম সৌরভ, বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম, ময়না মিয়া,স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রুজেল আহমেদ, আবুল হাসনাত, জেলা ছাত্রদল নেতা ইয়াহিয়া হাসান প্রমুখ। এ সময় সদর উপজেলা ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বলেন,বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের দুঃসময়ে যারা রাজপথে নির্যাতিত ও নিপিিতড় হয়েছেন, তাদের যথাযথ মূল্যায়নের ভিত্তিতেই ভবিষ্যতের ইউনিয়ন কমিটি গঠন করতে হবে। আওয়ামী লীগ ঘেঁষা বা ফ্যাসিস্টদের সাথে সম্পৃক্ত কোনো ব্যক্তিকে কমিটিতে রাখা যাবে না বলেও তারা দাবি জানান। দুর্দিনে যারা আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন তাদেরকে কমিটিতে মুল্যায়ন করা হবে। তারা বলেন,সুনামগঞ্জে জাতীয়তাবাদি শক্তির প্রাণপূরুষ এবং বিগত স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে জেল জুলুম,হুলিয়া মাথায় নিয়ে এই সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা কেবল জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক ও বর্তূমান জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-৪(সদর ও বিশ্বম্ভরপুর) আসনে ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী এ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম নুরুলের নেতৃত্বে আমরা রাজপথে ছিলাম এবং আগামী নির্বাচনে এই আসনে জনপ্রিয় ধানের শীষের প্রার্থী একমাত্র নুরুল ইসলাম নুরুলকে বিএনপির প্রার্থী করতে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া,ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নিকট তৃণমূলের নেতৃবৃন্দরা জোর দাবী জানান।
(২২ অক্টোবর) সকালে টাঙ্গাইল পৌর এলাকার পার্ক বাজার সংলগ্ন গৌর ঘোষ দধি ও মিষ্টান্ন ভান্ডারে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানটি পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল। তিনি তার বিশেষ মনিটরিং টিম নিয়ে দোকানে থাকা দইয়ের উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ না থাকা, বেশ কিছু পরিমাণ পচে যাওয়া দই দোকানে সংরক্ষণ করা এবং মিষ্টান্ন তৈরীর বড় কড়াইয়ে টিকটিকির মল পাওয়ার দায়ে টাঙ্গাইলের গৌর ঘোষ দধি ও মিষ্টান্ন ভান্ডারকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, গৌর ঘোষ দধি ও মিষ্টান্ন ভান্ডারকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে, আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবেন। অভিযানে পৌর স্যানেটারি ইন্সপেক্টর ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে গৌর ঘোষ দধি ও মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী স্বপ্নন কুমার ঘোষ জানান, সাধারণত তিনি খুচরা ভাবে দধি বিক্রি করে থাকেন। ফলে তৈরিকৃত দধিতে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ দেওয়া সম্ভব হয় না। তবে এখন থেকে দেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, উদ্ধারকৃত পচে যাওয়া দধিগুলো ফেলে দেওয়ার জন্য রাখা হয়েছিল। এছাড়া যে মিষ্টি তৈরীর বড় কড়াইয়ে টিকটিকির মল হাওয়া গেছে, সেটি বর্তমানে মিষ্টি তৈরীর কাজে ব্যাবহার করা হচ্ছে না। আমরা সবসময় চেষ্টাকরি গ্রাহককে সর্বোচ্চ মানের দধি ও মিষ্টান্ন সরবরাহ করার।
সুনামগঞ্জে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর কোন সুযোগ নেই। অবাধ,সুষ্ঠ সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সরকারের পাশাপাশি সকল বাহিনী ইতিমধ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আজ শুক্রবার দুপুরে সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলার লাউরেরঘর এলাকায় শ্রী শ্রী অদ্বৈত মহাপ্রভুর মন্দির কমপ্লেক্স ভবণ নির্মাণ কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে এসব কথা বলেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে সরকার নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে এবং নির্বাচন কমিশন সেই অনুযায়ী কাজ করবে। সেই সাথে ইতিমধ্যে পুলিশের ট্রেনিং, সেনাবাহিনীর কতজন লোক থাকবে সেই কাজও শুরু হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা নির্ধারিত তারিখে এই সরকার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎস উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে জাতীয় নির্বাচন সম্পূর্ণ করতে পারবে সেই প্রস্তুুতি সরকারের আছে। এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আমরা আমাদের পুরোনো ঠিকানায় চলে যাবো। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক ডাঃ মোহাম্মদ ইলিয়াছ মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান মানিক ,শ্রী শ্রী অদ্বৈত ধাম পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক অদ্বৈত রায় ও সুরঞ্জিত চৌধুরী টপ্পা প্রমুখ।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার আজ (বুধবার) কক্সবাজারে ব্র্যাক কর্তৃক বাস্তবায়িত এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত ‘PLEASE (Plastic Waste Recycling for Livelihood, Environment and Sustainability Enhancement)’ প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ও গবেষক ড. সাইমুম পারভেজ। PLEASE প্রকল্পটি বাংলাদেশের অন্যতম উদ্ভাবনী পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ, যার লক্ষ্য প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে টেকসই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে রূপান্তর করা। প্রকল্পটি নাগরিকদের সচেতন করে বর্জ্য পৃথকীকরণে উৎসাহিত করছে, নিরাপদ সংগ্রহ ও নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করছে এবং সংগৃহীত প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার করে তৈরি করছে মানসম্মত ও জলবায়ু সহনশীল আসবাবপত্র। এই উদ্যোগ কেবল পরিবেশ সুরক্ষাই নয়, বরং কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং স্থানীয় অর্থনীতিকে গতিশীল করার এক অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। পরিদর্শন শেষে ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার বলেন, “বিএনপি তার ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামতের এজেন্ডায় পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলাকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছে। এর অন্যতম প্রতিশ্রুতি হলো—দেশব্যাপী বর্জ্য সংগ্রহ, পৃথকীকরণ, নিরাপদ নিষ্পত্তি ও পুনর্ব্যবহারের একটি সমন্বিত জাতীয় ব্যবস্থা গঠন।” তিনি আরও বলেন, “বর্তমান বাংলাদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রায় অদৃশ্য—রাস্তাঘাট, নদী ও খালের পাশে অগণিত বর্জ্য ফেলায় পরিবেশ দূষণ বাড়ছে, রোগবালাই ছড়াচ্ছে, আর অর্থনীতি হারাচ্ছে তার উৎপাদনশীল শক্তি। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি এই অচলাবস্থা ভেঙে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে নাগরিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করা হবে।” তিনি প্রকল্পে কর্মরত নারী ও তরুণ কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং তাঁদের কাজের প্রশংসা করে বলেন, “এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণ, বিশেষ করে নারী ও তরুণরা বিকল্প আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন। একদিকে পরিবেশ রক্ষা হচ্ছে, অন্যদিকে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে—এটাই টেকসই উন্নয়নের প্রকৃত রূপ।” ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে ড. হায়দার বলেন, “বিএনপি সরকার গঠন করলে প্রতিটি পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, যেখানে স্থানীয় সরকার, বেসরকারি খাত ও জনগণ একসঙ্গে কাজ করবে। এভাবেই আমরা ‘Green Bangladesh’ গড়ে তুলব—যেখানে পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও অর্থনীতি একে অপরের পরিপূরক হবে।” তিনি আরও বলেন, “তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের এজেন্ডা শুধু রাজনৈতিক সংস্কার নয়—এটি একটি সমন্বিত জাতীয় পুনর্জাগরণের রূপরেখা, যেখানে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য, পরিবেশ, কর্মসংস্থান এবং ডিজিটাল রূপান্তর একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। আমরা মাঠে নেমে সফল মডেলগুলো পর্যবেক্ষণ করছি, যাতে ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র পরিকল্পনায় এগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।” ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “যদি রাজনৈতিক সদিচ্ছা, প্রযুক্তি, স্থানীয় উদ্ভাবন ও জনগণের অংশগ্রহণ একসঙ্গে কাজ করে, তবে বাংলাদেশ একদিন দক্ষিণ এশিয়ার পরিবেশ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মডেল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। স্বাস্থ্যসম্মত ও টেকসই বাংলাদেশ গড়াই এখন আমাদের জাতীয় অঙ্গীকার।”
সাজিদ পিয়াল: কৃষকদের সুবিধার্থে একই দোকানে সার ও বীজ বিক্রয়ের অনুমতি প্রদানের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে টাংগাইল জেলা (BADC) বীজ ডিলাররা। ২৮ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (BADC) বীজ ডিলার টাঙ্গাইল জেলা শাখার উদ্যোগে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এই মানববন্ধনে অংশ নেন টাংগাইল জেলার বিভিন্ন উপজেলার বীজ ডিলাররা। বক্তব্য রাখেন জেলা বীজ ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মো. আরিফুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক বিপ্লব হোসেন এবং সদস্য সচিব গোলাম কিবরিয়া প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি এবং তাঁদের দাবি পাঠানোর জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করেন। উক্ত অনুষ্ঠানটিতে বক্তারা উল্লেখ্য করেন ২০১০ সালের নীতিমালা অনুযায়ী বীজ ডিলাররা এক বছর পর সার ডিলারে রূপান্তরিত হওয়ার সুযোগ পায়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেই ডিলারশিপ না পাওয়ায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। একই দোকান থেকে যেন সার ও বীজ বিক্রির সুযোগ পেলে কৃষকরা এক জায়গায় সব কৃষি উপকরণ সংগ্রহ করতে পারবেন। এতে সময় ও খরচ দুইটিই বাঁচবে। আরও বলেন, ‘কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী আমরা বিএডিসির মানসম্মত বীজ সরবরাহ করে আসছি। কৃষকের সুবিধার্থে বীজ ডিলারদের সার ডিলারশিপ দ্রুত বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানানো হয়।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে অভিযান চালিয়ে চুরি,ছিনতাই, চাঁদাবাজি,ডাকাতি ও একাধিক মাদক মামলাসহ মোট ১৪ (চৌদ্দ) টি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত ও পেশাদার অপরাধী জাহাঙ্গীর আলম ওরফে কসাই জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১ (সিপিসি-৩) নোয়াখালী ক্যাম্পের সদস্যরা। রবিবার দুপুরে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানাধীন মিরওয়ারীশপুর ইউপির ১নং ওয়ার্ডস্থ রিয়াজ স্টোরের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাব-১১,নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার মিঠুন কুন্ড । তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় ২০১৮ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের একটি মামলায় (মামলা নং-১৩,তারিখ-১৮/০৭/২০২৫ইং) বিচারকার্য চলাকালে পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এর ভিত্তিতে আজ তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আরও জানান গ্রেফতারকৃত কসাই জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় উল্লেখিত মাদক মামলা ছাড়াও আরও ১৩টি মামলা রয়েছে। এসব মামলার মধ্যে রয়েছে চুরি,ছিনতাই,চাঁদাবাজি, ডাকাতি এবং বিভিন্ন ধারার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের একাধিক মামলা। দীর্ঘদিন ধরে সে গ্রেফতার এড়ানোর জন্য পলাতক ছিল। র্যাব-১১,সিপিসি-৩ এর চৌকস দল গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে তার অবস্থান নিশ্চিত করে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে তার নাম-পরিচয় নিশ্চিত করে এবং ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি বলে স্বীকার করে। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গ্রেফতারকৃত কসাই জাহাঙ্গীরকে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে