ভারত ৪০ রোহিঙ্গাকে সাগরে ফেলে দিয়েছে! – জাতিসংঘের আশঙ্কাজনক প্রতিবেদন

ভারতের বিরুদ্ধে সম্প্রতি একটি চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে, যেখানে বলা হয়েছে দিল্লি থেকে আটক করা ৪০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে দেশটির নৌবাহিনী আন্দামান সাগরে নিয়ে গিয়ে সাগরে ফেলে দিয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস এই ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেছে বলে জানা গেছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
জানা গেছে, গত ৬ মে ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে পুলিশ বেশ কিছু রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করে। এরপর তাদের মধ্যে ৪০ জনকে চোখ বেঁধে প্রায় ১৫০০ মাইল দূরের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি জাহাজে তোলা হয় তাদের। পরবর্তীতে জাহাজটি আন্দামান সাগরের মধ্য দিয়ে মিয়ানমারের তানিনথারী অঞ্চলের দিকে যাত্রা করে।
ভুক্তভোগী রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, তানিনথারির উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছানোর পর তাদের লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হয় এবং সাগরে ঝাঁপ দিতে বাধ্য করা হয়। ভারতীয় নৌবাহিনীর সদস্যরা তাদের নির্দেশ দেন যেন মিয়ানমারের কাছাকাছি কোনো দ্বীপে সাঁতরে চলে যায়। এদের মধ্যে কিশোর, বৃদ্ধ এবং এমনকি একজন ক্যান্সার রোগীও ছিলেন। ভাগ্যক্রমে, সবাই জীবিত অবস্থায় তীরে পৌঁছাতে সক্ষম হন।
বিশ্ব/আন্তর্জাতিক রিলেটেড নিউজ
রোহিঙ্গাদের কয়েকজন জানিয়েছেন, সাগরে ফেলে দেওয়ার আগে ভারতীয় সেনারা তাদের মারধর এবং মানসিক নির্যাতনও চালায়। ভারতের মানবাধিকার সংগঠন পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ এই ঘটনাকে ‘নির্মম ও অমানবিক’ বলে অভিহিত করেছে।
জাতিসংঘের মিয়ানমার মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক বিশেষ দূত টম অন্ড্রুস এ ঘটনাকে "ভয়াবহ" হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং ভারত সরকারের কাছে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছেন। তিনি জানান, এই বিষয়ে আরও সাক্ষ্য ও প্রমাণ সংগ্রহের কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, ভারত সরকার রোহিঙ্গাদের শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না এবং তাদের নিরাপত্তার হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর বাইরে ২২ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা ভারতেও আশ্রয় নিয়েছেন, যদিও দেশটি তাদের অবৈধ হিসেবে গণ্য করে।
এছাড়া, গত সপ্তাহে ভারত গুজরাট থেকে আরও ৭৮ জন রোহিঙ্গাকে ধরে এনে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী সুন্দরবনে ফেলে রেখে যায়। ১০ মে বাংলাদেশ তাদের উদ্ধার করে। এই ধরণের পুশব্যাক কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন