ইসরায়েলি হামলায় গাজা হাসপাতালেই নিহত হলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক হাসান এসলাইহ

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে যে, তারা গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনুস শহরে অবস্থিত নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে "টার্গেটেড অ্যাটাক" চালিয়েছে, যেখানে দুইজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের একজন হলেন খ্যাতনামা ফিলিস্তিনি সাংবাদিক হাসান এসলাইহ।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম অফিস নিশ্চিত করেছে যে, সাংবাদিক এসলাইহ আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ৭ এপ্রিল নাসের হাসপাতালের পাশে একটি গণমাধ্যম টেন্টে ইসরায়েলি হামলায় তিনি গুরুতর দগ্ধ হন এবং হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি ছিলেন।
হামলার পরের দৃশ্য এএফপির ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে—হাসপাতাল ভবন থেকে ধোঁয়া উড়ছে এবং উদ্ধারকর্মীরা টর্চলাইটের সাহায্যে ধ্বংসস্তুপের মধ্যে জীবিতদের খুঁজছেন।
মুসলিম বিশ্ব রিলেটেড নিউজ
হাসপাতালের এক কর্মী, যিনি নিজের নাম আবু গালী বলেছেন, এএফপিকে জানান, “ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ বেসামরিক ও সামরিক লক্ষ্যের মধ্যে কোনো পার্থক্য করে না। এটি একটি বেসামরিক হাসপাতাল, যেখানে সারাক্ষণ আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।”
নিহত সাংবাদিক হাসান এসলাইহ ছিলেন আলাম২৪ নিউজ এজেন্সির পরিচালক এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ফ্রিল্যান্স ফটো সাংবাদিক হিসেবে কাজ করতেন। তিনি হামাসের নেতৃত্বাধীন ৭ অক্টোবরের হামলার ছবি তুলেছিলেন।
ইসরায়েল দাবি করেছে, এসলাইহ হামাসের একজন যোদ্ধা ছিলেন এবং ৭ অক্টোবরের হামলায় অংশ নিয়েছিলেন, যদিও এসলাইহ জীবিত অবস্থায় এই অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করেছিলেন।
কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (CPJ)-এর তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিন, ইসরায়েল এবং লেবাননে অন্তত ১৭৮ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। গাজার সরকারি তথ্যমতে, নিহতের সংখ্যা ২১৫।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী টেলিগ্রামে পোস্ট দিয়ে দাবি করেছে, তারা যে স্থাপনাটিতে হামলা করেছে, সেটি ছিল হামাসের “কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল কমপ্লেক্স”, যেটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছিল। তবে তারা এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, “হাসপাতালগুলোর উপর একের পর এক হামলা এবং চিকিৎসাধীন রোগীদেরকে চিকিৎসাকক্ষেই হত্যা করার ঘটনা প্রমাণ করে যে ইসরায়েল স্বাস্থ্যখাতকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিতে চায়।”
উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালের জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী, হাসপাতাল, চিকিৎসা কর্মী ও রোগীদের উপর হামলা আন্তর্জাতিকভাবে অবৈধ।
গাজা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েল কমপক্ষে ৩৬টি হাসপাতাল বোমাবর্ষণ ও পুড়িয়ে দিয়েছে।
সূত্র : আল জাজিরা
মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন