বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্ভাব্য পদত্যাগ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে উদ্বেগ বাড়ছে। এনসিপি’র মুখপাত্র সর্জিস আলম এক বক্তব্যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, "ড. ইউনূস যদি দায়িত্ব ছেড়ে দেন, তাহলে বাংলাদেশ অস্থিতিশীলতার দিকে ধাবিত হবে।"

যমুনা টিভির এক আলোচনায় সর্জিস আলম জানান, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে রাজধানী ঢাকার যমুনা ভবনের আশপাশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দাবিতে বারবার অবরোধ সৃষ্টি করা হচ্ছে, যা ড. ইউনূসের কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে। তার মতে, এসব অবরোধ শুধু ব্যক্তি বা সংগঠনের দাবি নয়, বরং সরকারের কার্যক্রমে ইচ্ছাকৃতভাবে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে।

তিনি বলেন, “ড. ইউনূস ক্ষমতার জন্য এখানে আসেননি। তিনি এসেছেন জনগণের চাওয়া পূরণ ও সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য। তাকে যদি কাজ করতে না দেওয়া হয়, তবে তার এই পদে থাকার যৌক্তিকতা থাকবে না।”

জাতীয় রিলেটেড নিউজ

বাংলাদেশকে কেন লাল তালিকায় রাখল আমেরিকা?

বেগমগঞ্জে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুই সহোদর সহ গণপিটুনিতে একজনের মৃত্যু।

বিমসটেকের অফিশিয়াল ডিনারে পাশাপাশি ড. ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি

নারী কমিশনের প্রস্তাবনা কি ড. ইউনুসকে জনমানস থেকে আলাদা করতে চায়?

সর্জিস আলম আরও জানান, এনসিপি ও অভ্যুত্থান আন্দোলনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, তারা নির্বাচনের সময় পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষে নয়। তারা চান ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে একটি স্বচ্ছ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। বিএনপিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “নির্বাচনের দিন-তারিখ নিয়ে উদ্বেগ থাকলে রাজনৈতিকভাবে আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান খোঁজা উচিত, অবরোধ ও অস্থিরতা সৃষ্টি করে নয়।”

তিনি আরও বলেন, “ড. ইউনূস কেবল নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্বে নেই। তার ওপর বিচার ও কাঠামোগত সংস্কারের দায়িত্বও রয়েছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক গণহত্যার বিচার তার দায়িত্বের আওতায় পড়ে। তিনি যদি এই দায়িত্বগুলো পূরণ করতে না পারেন, তবে কেবল নির্বাচন আয়োজন করে চলে যাওয়া তার মত একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির জন্য যথেষ্ট নয়।”

তিনি দাবি করেন, সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুজব অনুযায়ী ড. ইউনূস পদত্যাগের কথা বিবেচনা করছেন। এমন অবস্থায় নাহিদ ইসলামসহ অভ্যুত্থান সংশ্লিষ্ট নেতারা তাকে দায়িত্বে থাকার অনুরোধ করেছেন এবং দেশের স্থিতিশীলতার স্বার্থে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন।

শেষ পর্যন্ত, সর্জিস আলম বলেন, “বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এখন একটি সংবেদনশীল মোড়ে। ড. ইউনূসের নেতৃত্ব ছাড়া এই মুহূর্তে এমন একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া কঠিন, যাকে সব রাজনৈতিক দল মেনে নেবে। তাই তার পদত্যাগ দেশকে গভীর সংকটে ফেলতে পারে।”