আলেমরা টাকা খেয়ে কথা বলে! মাদ্রাসা ছাত্র ও আলেমদের নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য ফজলুর রহমানের।
-(10).png)
বাংলাদেশের বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তি ফজলুর রহমান সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে দেশের সম্মানিত আলেম সমাজকে নিয়ে চরম বিতর্কিত ও অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। তাঁর এই বক্তব্যে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া।
ফজলুর রহমানের বক্তব্যের ভিডিওটি সম্প্রতি ATN News-এর ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়, যেখানে তিনি প্রকাশ্যে বলেন,
“৫০০ টাকার জায়গায় ১০০০ টাকা দিলে ওয়াজের বা মোনাজাতের ভাষা পরিবর্তন হয়ে যায়। এদের কথার কোন উত্তর আমি দিতে চাই না। এরা বড় বড় কথা বলে, কিন্তু কোনো সেন্স কাজ করে না। এরা হলো মোল্লা মুন্সি।”
জাতীয় রিলেটেড নিউজ
তিনি আরো বলেন,
“মোল্লা কিন্তু ইসলাম নয়। ইসলাম মহান, কিন্তু মোল্লাতন্ত্র চিরদিন ইসলামকে ছোট করেছে। বাংলাদেশে মোল্লারা ধর্মের নামে ব্যবসা শুরু করেছে।”
এই বক্তব্যে তিনি সরাসরি আলেম সমাজকে ‘ধর্মব্যবসায়ী’ আখ্যা দেন এবং ইসলামিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর সন্দেহ প্রকাশ করেন। তাঁর অভিযোগ অনুযায়ী, বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে অর্থের বিনিময়ে বক্তৃতার ভাষা পরিবর্তন হয়, এবং ধর্মের নামে ‘ব্যবসা’ হয়।
ফজলুর রহমান শুধু আলেমদের নয়, মাদ্রাসায় পড়ুয়া গরিব ছাত্রদের নিয়েও অত্যন্ত অবমাননাকর ভাষায় কথা বলেন। তিনি বলেন,
“এই ছেলেপেলেরা কিছুই বোঝে না। হুজুর যা বলে তাই শোনে। তারা খায় লিল্লাহ টাকা, মানুষের অনুদানে চলে।”
এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থাকে অবজ্ঞা করেছেন বলে অভিমত বিশ্লেষকদের।
ফজলুর রহমানের বক্তব্যে নারীবিদ্বেষী ও বিভাজনমূলক মনোভাবও ফুটে ওঠে। তিনি বলেন,
“নারী নীতি যারা করে, আমি বলি এমন সন্তান যেন কোনো মা গর্ভে না নেয়। যদি বেগম রোকেয়া আজ থাকতেন, এই মোল্লা মুন্সিরা তাকেও দেশছাড়া করত।”
এই ধরনের মন্তব্য শুধুমাত্র আলেমদের অপমান করে না, বরং নারীদের নিয়েও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য হিসেবে গণ্য হচ্ছে।
দেশের বিভিন্ন ইসলামিক প্রতিষ্ঠান, আলেম সমাজ, ও সাধারণ মুসলমানরা ফজলুর রহমানের এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। ইসলামপন্থী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও দারুল উলুমের শিক্ষকদের অনেকে এই বক্তব্যকে ইসলামবিরোধী ও বিভ্রান্তিকর আখ্যা দিয়েছেন।
বিশিষ্ট আলেম মুফতি আহমদুল্লাহ বলেন,
“ফজলুর রহমানের বক্তব্য শুধু অপমানজনক নয়, এটা ইসলাম ও আলেম সমাজকে হেয় করার জন্য একটি পরিকল্পিত আক্রমণ।”
অনেকে মনে করছেন, ফজলুর রহমান রাজনৈতিকভাবে আলোচনায় আসার জন্য ইসলামপন্থীদের আক্রমণ করছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, ধর্মীয় শক্তিকে দুর্বল ও বিতর্কিত করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতেই এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া হয়েছে।
অনেক ধর্মপ্রাণ নাগরিক দাবি তুলেছেন—এই বক্তব্য সংবিধানের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং সামাজিক স্থিতি বিনষ্ট করার শামিল। তারা সরকারের কাছে এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশে ধর্ম এবং আলেম সমাজের প্রতি মানুষের গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে একজন রাজনীতিবিদের মুখে এমন কুরুচিপূর্ণ, অবমাননাকর বক্তব্য দেশের ধর্মীয় স্থিতি ও মূল্যবোধের ওপর সরাসরি আঘাত। প্রশ্ন একটাই—এই বক্তব্যের মাধ্যমে কি তিনি নিজের অবস্থান শক্ত করতে চাচ্ছেন, নাকি ইসলামের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ধ্বংস করতে চাইছেন?
মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন