প্রভাবশালীদের দ্বন্দ্বে রণক্ষেত্র সিরাজগঞ্জ, আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছে মানুষ
-(23).png)
দীর্ঘ দুই মাস ধরে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার কুলিয়ারচর ও বাগধনালী গ্রাম দুটি একের পর এক সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। দুই গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আধিপত্য বিস্তার ও পারস্পরিক শত্রুতার কারণে এই সহিংসতা থামছে না। হামলার আতঙ্কে কুলিয়ারচর গ্রামের বাসিন্দারা গ্রাম ছেড়ে আত্মীয়দের সহায়তায় আসবাবপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ মাথায় করে, কেউবা ভ্যান-রিকশায় করে জিনিসপত্র নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। এরা কেউ নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত নন, বরং হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ভয়ে এলাকা ত্যাগ করছেন।
প্রায় দুই মাস ধরে চলা এই সংঘর্ষে মঙ্গলবার আবার নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়, যখন প্রতিপক্ষের আঘাতে কুলিয়ারচরের কৃষক নজরুল ইসলাম নিহত হন। এরপর বাগধনাল গ্রামের লোকজন কুলিয়ারচরে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে। অভিযোগ ওঠে, আজম রিদাউ নামে একজনের নেতৃত্বে একটি বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছে, যারা এলাকায় চাঁদাবাজি করছে এবং সহিংসতার জন্য দায়ী। স্থানীয়রা এর সুষ্ঠু বিচার ও দোষীদের ফাঁসি দাবি করছেন।
দিনভর হামলার পর রাতে আবার আক্রমণের আশঙ্কায় অধিকাংশ মানুষ গ্রাম ছেড়ে যান। অনেকে চালের বস্তা, গবাদিপশুসহ মূল্যবান জিনিসপত্র আত্মীয়দের মাধ্যমে সরিয়ে নিচ্ছেন। স্থানীয়দের দাবি, এই পরিস্থিতির জন্য দুই গ্রামের নেতৃত্বকারী দুই পক্ষই দায়ী। তারা যদি শান্তি না রাখে, তাহলে সাধারণ মানুষের মুক্তি অসম্ভব।
বাংলাদেশ রিলেটেড নিউজ
পুলিশ ও প্রশাসনের ভাষ্যমতে, দুই প্রভাবশালী — লিয়াকত গ্রুপ ও আজম গ্রুপ — গ্রামের মানুষদের সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। প্রশাসন জানিয়েছে, নজরুল ইসলামের হত্যার ঘটনায় মামলা হবে, এবং যারা লুটপাটে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধেও মামলা করে দোষীদের গ্রেফতার করা হবে। তবে সমাধানে নানা জটিলতা থাকায় উত্তেজনা এখনো প্রশমিত হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিয়মিত কাউন্সেলিং ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই সংঘর্ষ নিয়ে ইতোমধ্যেই থানা ও আদালতে প্রায় ২৫টি মামলা হয়েছে, যা সংঘাতের গভীরতা ও স্থায়িত্ব নির্দেশ করে।
মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন